উদ্বোধনের অপেক্ষায় সিলেটের নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর বাস টার্মিনাল

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ দেশের প্রথম নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর বাস টার্মিনাল নির্মিত হয়েছে সিলেটে। নগরির দক্ষিণ সুরমার কদমতলীতে ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি নির্মিত হচ্ছে। ৯০ ভাগেরও বেশি কাজ শেষ। সর্বাধুনিক এই বাস টার্মিনাল এখন কেবল উদ্বোধনের অপেক্ষায়।কদমতলির পুরনো টার্মিনাল এলাকাতেই ৮একর জায়গা নিয়ে নির্মীয়মান সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের কাজ করছে ঢালি কনস্ট্রাকশন। চলতি মাসেই কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সূত্র জানায়, এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৪৮টি বাস রাখার ব্যবস্থা থাকবে। আর থাকবে যাত্রীদের জন্য প্রায় দেড় হাজার আসনের বিশাল ওয়েটিং লাউঞ্জ, ৩০ আসনের ভিআইপি কক্ষ ও ৩০টি টিকিট কাউন্টার এবং নামাজের কক্ষ। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) উদ্যোগে নির্মাণাধীন এ টার্মিনালের নকশা করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সিলেট-এর স্থাপত্য বিভাগের ৩ শিক্ষক।

সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, দ্বিতল এই টার্মিনালের আগমন ও বহির্গমন অংশ আলাদা করা হলেও করিডোরের মাধ্যমে পুরো স্থাপনাকে সংযুক্ত করা হয়েছে। থাকছে সিসিটিভি মনিটরিং, পুলিশকক্ষ এবং পর্যটন অফিস। এমন দৃষ্টিনন্দন আধুনিক বাস টার্মিনাল দেশের মধ্যে প্রথম সিলেটে-ই নির্মিত হচ্ছে। এটি পরিচালনার জন্য নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে। এখানে পার্কিং এলাকা ছাড়া গাড়ি দাঁড় করানো যাবে না, বসানো যাবে না ইচ্ছামতো কাউন্টার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন নান্দনিক ও আধুনিক টার্মিনাল আধ্যাত্মিক নগরি সিলেটের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেবে।প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান জানায়, টার্মিনালের প্রতিটি কাজ অত্যন্ত যত্মসহকারে করা হচ্ছে। টার্মিনালের ছাদের স্টিল ও ঢেউটিন আনা হয়েছে তাইওয়ান থেকে। স্টিল স্ট্রাকচারের জন্য লোহার বার আনা হয়েছে চায়না থেকে এবং প্রতিটি জিনিস বুয়েটে টেস্ট করা হয়েছে। বিমানবন্দরের মতো বিশাল ওয়েটিং স্পেস রাখা হয়েছে।

এদিকে, একসময় যে টার্মিনালের বিভিন্ন স্থান ছিলো ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়, দুর্গন্ধময় ছিলো চারদিক। বর্ষায় টার্মিনালে পা ফেলাই ছিল দায়। সেই টার্মিনালের এমন অবকাঠামো উন্নয়নে উৎফুল্ল যাত্রী সাধারণ, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পরিবহন শ্রমিকরা।
কদমতলীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামীম বকত গণমাধ্যমকে বলেন, নবনির্মিত এ টার্মিনাল খুব সুন্দর। পূর্বে টার্মিনালে নানা কারণে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়তেন। এখন আধুনিক এই টার্মিনাল থেকে মানুষ যেন সর্বোচ্চ ভালো সেবা পায় এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি হাজী ময়নুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, এমন বাস টার্মিনাল দেশের মধ্যে সিলেটে প্রথম। এজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। দেশের মধ্যে সুন্দরতম ও আধুনিক বাস টার্মিনালটি চালু হওয়ার পর আমরা যদি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে না পারি তবে তা হবে দুঃখজনক। যাত্রীদের নিরাপত্তা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের খেয়াল রাখতে হবে।তিনি বলেন, পরিবহন নেতাদের নিয়ে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বৈঠকে বসবেন। ওই সভায় উদ্বোধনের দিন-তারিখ হয়তো জানা যাবে। তবে আমাদের দাবি, একসাথে পুরো টার্মিনাল যেন উদ্বোধন ও চালু করা হয়।উদ্বোধনের বিষয়ে সিসিক’র প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘উদ্বোধনের দিন-তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি। এ বিষয়ে মেয়র আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন, তাঁর পরামর্শে পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে শিগগিরই উদ্বোধনের আশা রয়েছে।’

You might also like