উড়ো চিঠি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ সম্প্রতি একটি কারাগার থেকে আসামি পালানোর ঘটনার পরই দেশের কারাগারগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, একটি কারাগারে যে উড়ো চিঠি এসেছে, সেটা যাচাইয়ের জন্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে।মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে মানবিক দিক বিবেচনায় গত মার্চে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে ছয় মাসের জন্য তাকে মুক্তি দেয় সরকার। সেই মুক্তির মেয়াদ মঙ্গলবার আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে সরকার।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার দণ্ডাদেশ শর্তসাপেক্ষে আরও ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তিনি এ সময় ঢাকায় থেকে চিকিৎসা নিতে পারবেন। তবে বিদেশ যেতে পারবেন না।দেশের কারাগারগুলোতে হঠাৎ করে জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় নিরাপত্তা বা কারারক্ষী বাড়ানো হয়েছে– এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের কারাগারগুলো সুরক্ষিত করার জন্য এটা করা হয়েছে। আপনারা জানেন, কারাগার থেকে আমাদের একজন আসামি কারারক্ষীদের দুর্বলতার কারণে কারাগার থেকে পালিয়েছে। সেজন্যই আমরা কারাগারকে আরো শক্তিশালী করছি। যাতে করে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। আমরা সেখানে পাহারা বৃদ্ধি করছি সেটা নয়, কারাক্ষীদের দায়িত্ব যেন সঠিকভাবে পালন হয় সে ব্যবস্থা করেছি। আমরা জঙ্গির মূল উৎপাটন করে দিতে পারিনি, তবে নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি।
লালমনিরহাটের কারাগারে উড়ো চিঠির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের উড়ো চিঠি ও কাগজ আমাদের কাছে সব সময় আসে ও বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে থাকে। এ বিষয়ে আমরা কখনো মনোযোগ দিই না। তবে আমরা সবসময় তথ্যভিত্তিক কাজ করে থাকি। আমাদের কাছে যখন গোয়েন্দা তথ্য আসে তখনই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। উড়ো চিঠি যেগুলো আসছে সেগুলো গোয়েন্দাদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। তারা যদি মনে করেন এগুলোর কোনো তথ্য আছে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।মিয়ানমার সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে। সেখানে আমাদের কী ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি সীমান্তে মাঝে মাঝেই সৈন্য সামন্ত বৃদ্ধি করেন বা অবস্থান করেন। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়েছে। তাদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আমাদের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্তে সেনা মোতায়নের কারণের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া আমরা আমাদের পক্ষ থেকে যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকি। এটা নতুন কিছু নয়।
সীমান্তে সেনা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কি-না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আর আমরা সবসময় প্রস্তুত থাকি। আমাদের রোহিঙ্গাসহ নানা সমস্যা রয়েছে। তারপরও প্রধানমন্ত্রী প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বন্ধুসুলভ আচারণ করে যাচ্ছি। আমাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হলো, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। প্রধানমন্ত্রীসহ বঙ্গবন্ধু নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা চলছি।
বিজিপি ও বিএসএফের বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে কোনো পরিবর্তন আসছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিজিপি ও বিএসএফ আলোচনা প্রতিবছরই হয়। সেখানে আমাদের বিজিপির ডিজি যান ও তারাও আসেন। এই প্রক্রিয়া চলমান। আমরাও ভারতে গিয়ে থাকি, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও আসেন। আমাদের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক আছে। তারিখ তো পরিবর্তন হতেই পারে যেকোনো কারণে। আগরতলা-আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসবেন। তবে কয়দিন অবস্থান করবেন সেটা বিজিপির ডিজি জানেন।সীমান্তে হত্যার বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে কি-না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে আমার কাছে এজেন্ডাগুলো নেই। তবে এসব বিষয় আলোচনা হবে। তাদের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব সুলভ সম্পর্ক রয়েছে। তাই তাদের সঙ্গে যেসব বিষয়ে সমস্যা রয়েছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে।