এস আলমের গাড়িকাণ্ড: চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

চট্টগ্রাম: এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের পরিবারের ব্যবহৃত ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নিতে সহায়তার অভিযোগে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের পরিবারের ব্যবহৃত ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নিতে সহায়তার অভিযোগে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।এতে বলা হয়, দলের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। পরবর্তী কমিটি ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নামে কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো যাবে না।প্রেস বিজ্ঞপ্তির সত্যতা ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।এর আগে শনিবার (৩১ আগস্ট) একই অভিযোগে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম এবং কর্ণফুলী থানা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম মামুন মিয়াকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছিল।জানা গেছে, নগরের একটি ওয়্যারহাউস থেকে দক্ষিণ জেলা বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন মডেলের দামি গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দিবাগত রাতের। ওই সময় চালকদের একটি টিম কালুরঘাট শিল্প এলাকার মীর গ্রুপের মালিকানাধীন ওয়্যারহাউসে আসেন। তাদের ব্যাকআপ দিতে কয়েকটি গাড়ি সেখানে পৌঁছায়। গাড়িগুলো থেকে নামেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, পটিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব অহিদুল আলম চৌধুরী পিবলু এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ হোসেন নয়ন। আরেকটি গাড়ি থেকে নামেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের ড্রাইভার মনসুর। সেই গাড়ির ভেতরে আবু সুফিয়ান বসে ছিলেন বলে ধারণা প্রত্যক্ষদর্শীদের। এস আলম গ্রুপের গাড়ি নিরাপদে বের হয়ে যাওয়ার পর বিএনপি নেতারা ঘটনাস্থল থেকে সরে যান।গাড়িগুলোতে কী ছিল সেটি জানা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শী কারও কারও ধারণা এগুলোতে বিপুল পরিমাণ টাকা ছিল। বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণের নামে এস আলম গ্রুপের টাকা লুটপাট নিয়ে সমালোচনা চলছে। এমন সময় গ্রুপটির ত্রাণকর্তার ভূমিকায় বিএনপি নেতাদের দেখে চট্টগ্রামে আলোচনা চলছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর দক্ষিণ জেলা বিএনপি শনিবার দুপুর ২টার দিকে একটি সম্মেলন করে। এতে অভিযুক্ত বিএনপি নেতারা এস আলমের গাড়ি সরিয়ে নিতে সহায়তার অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন।এর আগে ২৮ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এস আলম গ্রুপের জ‌মি ও সম্পদ না কেনার পরামর্শ দেন। এদিন তিনি জানান, এস আলম গ্রুপ এবং তা‌দের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক-লেনদেন ও ঋণ স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন প্রতিষ্ঠানটির নামে-বেনামে থাকা বি‌ভিন্ন জ‌মি ও সম্পদ বি‌ক্রি করার চেষ্টা করছে। এগুলো ঠেকাতে আইনি প্রক্রিয়া দরকার।ড. মনসুর বলেন, এস আলম বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি যিনি পরিকল্পিতভাবে ব্যাংক লুট করেছেন। এভাবে পৃথিবীতে কেউ ব্যাংক ডাকাতি করেছে কি না জানা নেই। এখন এস আলমের নামে–বেনামে থাকা সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। তাই এই মুহূর্তে এস আলমের সম্পদ যেন কেউ না কেনেন।

You might also like