ওসমানীনগরের এক কক্ষে ছিলেন: ৫ যুক্তরাজ্য প্রবাসীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ সিলেটের ওসমানীনগরে একই পরিবারের ৫ যুক্তরাজ্য নাগরিককে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে হাসপাতালে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর বাজারের মঙ্গলচন্ডী রোডের একটি বাসার কক্ষ থেকে তাদের উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।এদিকে, একসাথে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ৫জনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার ও তাদের মধ্যে দ’ুজনের মৃত্যু নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে।এটি সাফোকেশন অথবা পয়জনিং হতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিক ধারণা করছে।
এ ঘটনায় মৃত ব্যক্তিরা হলেন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫০) ও তাঁর ছেলে মাইকুল ইসলাম (১৮)। রফিকুল ইসলাম ওসমানীনগর উপজেলার বড় দিরারাই গ্রামের বাসিন্দা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম (৪৫), ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫) ও মেয়ে সামিরা ইসলাম (২০)।জানা যায়, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে ওসমানীনগরে বন্ধ একটি কক্ষের দরজা ভেঙে অচেতন অবস্থায় যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ৫ জনকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর বাবা-ছেলেকে মৃত ঘোষণা করা হয়।এদিকে, এই ঘটনাকে ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। বাসার ছোট একটি কক্ষে ৫ জন এক সাথে ছিলেন। ৫জনেই অসুস্থ হলেও বাসার বাকি সদস্যরা সুস্থ রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, রফিকুল ইসলামের বাসায় বেড়াতে আসা তাঁর শ্বশুর আনফর আলী (৭০) শাশুড়ি বদরুন্নেছা (৬৫), শ্যালক দেলোয়ার হোসেন (৪০), শ্যালকের স্ত্রী শোভা বেগম (৩০), শ্যালকের মেয়ে সাবিলা বেগম (৮) সুস্থ আছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম। তিনি জানান, যুক্তরাজ্যপ্রবাসী পরিবারের ৫ সদস্য ১৮ জুলাই দেশে ফেরেন। তাঁরা ওসমানীনগরের তাজপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় উঠেন। সেখানে শ্বশুড়-শাশুড়ি, শ্যালক ও শ্যালকের স্ত্রী ছিলেন।ঘরে থাকা অন্য সদস্যদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী দুজন খাওয়া-দাওয়া করে তাঁদের কক্ষে চলে যান। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পরিবারের সদস্যরা ঘুম থেকে না উঠলে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।ফরিদ উদ্দিন আরও বলেন, ‘ছোট কক্ষটিতে ৫ জন একসঙ্গে ছিলেন। এটি সাফোকেশন অথবা পয়জনিং হতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা করছি। পরবর্তীকালে যাঁরা ওই ঘরে ছিলেন, তাঁদের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে জানা যেতে পারে। যদি পয়জনিং হয়ে থাকে, তবে সেটি নিকটাত্মীয়দের দ্বারা হতে পারে। সাফোকেশন হয়ে থাকলে সেটি চিকিৎসকেরা পরবর্তীকালে বলতে পারবেন।এ ব্যাপারে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, মারা যাওয়া দু’জনের লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। অসুস্থ ৩ জনের অবস্থা খুবই খারাপ। প্রফেসর শিশির রঞ্জন চক্রবর্তীকে দিয়ে দিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ওই বোর্ডের অধীনেই অসুস্থদের চিকিৎসা চলছে।