করোনা মোকাবেলায় জাতিসংঘের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা চায় ঢাকা
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ কোভিড-১৯-এর প্রভাব মোকাবেলায় ঢাকা বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা,দৃঢ় অংশীদারিত্ব এবং জাতিসংঘের কোভিড-১৯ মোকাবেলা ও পুনরুদ্ধার তহবিল থেকে যথেষ্ট বরাদ্দ চেয়েছে।করোনা মহামারি এসডিজি অর্জন বাধাগ্রস্ত করতে পারে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জাতিসংঘের সাথে দৃঢ় অংশীদারিত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।তিনি জাতিসংঘের সাথে সমন্বিত অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন যাতে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে।
বুধবার (২ জুলাই) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পোর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠককালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।বৈঠকে ড. মোমেন দারিদ্র্য হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন এবং অন্যান্য আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তৈরি পোশাক খাত এবং প্রবাসী কর্মসংস্থানের ওপর করোনা মহামারি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে আশঙ্কা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ দুটি খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলভিত্তি।তিনি ফেরত আসা অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং তাদের পুনরায় কর্মসংস্থান ও বিদেশে ফেরত পাঠাতে জাতিসংঘের সহায়তা চান।
ড. মোমেন বাংলাদেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে জাতিসংঘ আরও সহায়তা বাড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে জলবায়ু প্রভাবের কথা তুলে ধরেন এবং প্যারিস চুক্তির আলোকে জলবায়ু প্রভাব নিরসনে উন্নত দেশগুলোর দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরামের বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কাজ করবে।মোমেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের এজেন্সিদের অব্যাহত সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান।তবে তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে কেনো অগ্রগতি না হওয়ায় গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউএনকে বিদ্যমান ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থার কাঠামোর অধীনে মিয়ানমারের সাথে আরও গঠনমূলকভাবে কাজ করার ওপর জোর দেন।তিনি বলেন, রাখাইন প্রদেশে চলমান সহিংসতা, অব্যাহত সামরিক অভিযান, ফলস্বরূপ অস্থিতিশীলতা মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার সন্ধানে ভূমি ও সমুদ্রের মধ্য দিয়ে পালিয়ে বিপজ্জনক ভ্রমণে বাধ্য করছে।তিনি দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা প্রসারে বৈশ্বিক জলবায়ু অভিযোজন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি একটি উদ্ভাবন ও জ্ঞান কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের সহযোগিতা চান।
জাতিসংঘের দল বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে এবং জাতিসংঘের এজেন্সিগুলো কীভাবে কার্যকরভাবে বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে যাত্রায় অংশীদার হতে পারে সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানায়।
মিয়া সেপ্পো কোপিড -১৯ এর আর্থ-সামাজিক ধাক্কা থেকে উদ্ধারে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের পূর্ণ সহয়তার আশ্বাস দেন। তারা মিয়ানমারের সাথে আরও গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ততার পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে জাতিসংঘের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক বলেন, ‘জলবায়ু অভিযোজন সম্পর্কে বিশ্ব বাংলাদেশ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে।’