কাউন্সিলর আজাদের বাসায় হামলার ঘটনাঃ মামলায় আটক ৪
সিলেট অফিস
সত্যবাণী
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের বাসভবনে হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২৮ জুন শুক্রবার রাতে কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ ১৪ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে আসামী করে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামীরা হলেন, কল্যাণপুরের মৃত শেখ মখন মিয়ার ছেলে শেখ নজরুল ইসলাম বিজয় (৩০), আলম মিয়ার ছেলে সুহেল (৩২), শেখ কবির উরফে সম্রাট করিবের ছেলে রাব্বি (২২) ও শেখ রুহিত (২০), মো. মান্নান মিয়ার ছেলে তারেক আহমদ (৩১), শাপলাবাগের সাজ্জাদ মিয়ার ছেলে ছামাদ আহমদ (২২), আব্দুর রহিম মল্লিকের ছেলে ফুজায়েল মল্লিক (২০), মিনহাজের ছেলে ইয়াকীন (২০), নাসির (২৩), মহিন মিয়ার ছেলে মুছা খান তপু (২১), কুশিঘাটের বাছিরের ছেলে শাওন (২৩), ভাটাটিকরের আমিন উদ্দিনের ছেলে রিয়াজুল, মোহাম্মদপুরের মৃত মো. জামাল উদ্দিনের ছেলে মো. রাহেল উদ্দিন রাবেন, জসিম মিয়ার ছেলে বোরহান (২৫)। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জন।
এদিকে, এ ঘটনায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)’র এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। আটককৃতরা হলেন- নজরুল, রাহেল, তারেক আহমদ ও ফুজায়েল।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নগরির ভাটাটিকর এলাকায় কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের বাসভবনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমানোর সময় বাসার সামনে লোকজনের আনাগোনা শুনতে পান আজাদুর রহমান। পরে দেখতে পান, অভিযুক্তরা পেট্রোল ভর্তি জারিক্যান, আগ্নেয়াস্ত্র, মশাল, হকিস্টিক, রামদা, লোহার পাইপসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আজাদুর রহমানের বাসার সামনে মারমুখী অবস্থান নিয়েছে। এসবের কারণ জিজ্ঞেস করায় তারা চিৎকার দিয়ে আজাদকে বলে, ‘‘আমরা তোর জম, আজ তর জীবনের শেষদিন’।’ একথা বলেই এলোপাতাড়িভাবে বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে অভিযুক্তরা। এতে বাসার প্রায় ১ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে৷ হামলার একপর্যায়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে আসলে আসামীরা গুলিবর্ষণ করতে করতে এলাকা ত্যাগ করে। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।যাওয়ার সময় আসামীরা আজাদুর রহমানকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর আজাদ বলেন, ‘যারা হামলা চালিয়েছে তাদের পূর্বপুরুষরাও চুরি-ডাকাতি, মাদক, চাঁদাবাজি, হামলা-দখলবাজিসহ নানা অপকর্ম করতো। বংশানুক্রমে চিহ্নিত ওই অপরাধীচক্র বেপরোয়া হয়ে উঠায় তাদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। সেসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান ছিল। ওই ক্ষোভ থেকেই তারা হামলা চালিয়েছে।’
সিটি কর্পোরেশনের ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণাঃ পালন হবে কর্মবিরতি
এদিকে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের বাসভবনে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে ৩ দিনের কর্মসূচির ঘোষণা করেছে সিসিক।
ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ মখলিছুর রহমান কামরানের সভাপতিত্বে ২৯ জুন শনিবার নগর ভবনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ৩০ জুন রোববার দুপুর ১২টায় পেন-ডাউনের মধ্য দিয়ে নগর ভবনসহ ৪২টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে একযোগে ১ ঘন্টা করে মোট ৫৭ ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করা হবে। এছাড়াও আগামী ১ জুলাই সোমবার টিলাগড় পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি ও ২ জুলাই মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত মেয়র মখলিছুর রহমান কামরান বলেন, ২০নং ওয়ার্ডের ৫ বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের বাসভবনে ন্যাক্কারজনক হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। এ ঘটনায় সকল কাউন্সিলর এবং সর্বস্তরের কর্মকর্তাদের সম্মতিতে আগামীকাল রোববার থেকে ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সভায় দোষীদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এ সময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সকল ওয়ার্ডের সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।