কুবির এক শিক্ষার্থীকে মারধর অভিযোগ “ছাত্রদল কর্মীর” বিরুদ্ধে
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
কুমিল্লা: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদল কর্মীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৭তম আবর্তনের মোহাম্মদ কাউসার। অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী তৌহিদুল ইসলাম একই আবর্তনে অধ্যায়নরত। ছাত্রদলের মিটিং-এ না যাওয়াকে কেন্দ্র করে এ মারধরের ঘটনা ঘটে।বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ১০০৪ নং রুমে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে হল প্রভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন মোহাম্মদ কাউসার।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, নবীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদল কিভাবে কাজ করবে তা নিয়ে মতবিনিময় করার জন্য হলের ৪০০৪ নম্বর কক্ষে মিটিং ডাকেন ছাত্রদলের আহ্বায়ক মামুনের অনুসারী ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মী মাজাহারুল ইসলাম আবির ও মাহদুজ্জামান ইপেল। এ ছাড়াও ওই কক্ষে উপস্থিত ছিলেন জুনায়েদ লামিম ও মেহেদী হাসান শাহিন। জুনিয়রদের মিটিং এ ডাকার দায়িত্ব পান ১৭তম আবর্তনের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তোফায়েল মাহমুদ নিবিড় ও একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম।এ সময় তৌহিদ ১০০৪ নং রুমে এসে কাউসারকে মিটিংয়ের যাওয়ার জন্য জোর করেন। কাউসার না যেতে চাইলে তৌহিদ মশারি ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় তৌহিদ বাহির থেকে কাঠের তক্তা নিয়ে এসে কাউসার মারতে শুরু করেন। এ সময় আরেক ছাত্রদল কর্মী তোফায়েল মাহমুদ নিবিড় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, রাত ১১টায় আমি রুমে ঘুমাচ্ছিলাম। তখন ছাত্রদল কর্মী তৌহিদ আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে মিটিংয়ে যেতে বলে। আমি না যেতে অস্বীকৃতি জানানোর পরও সে জোর করে। এক পর্যায়ে আমার মশারি টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলে এবং গালিগালাজ শুরু করে। তখন আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে চলে যেতে বলি কিন্তু সে কিছুক্ষণ পর কাঠের তক্তা নিয়ে এসে আমার মাথায় পাঁচ-ছয়বার আঘাত করে। তখন আমি হাত দিয়ে কোনো রকম নিজেকে রক্ষা করি।
অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী ও একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগের ১৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ তাওহীদুল ইসলাম জানান, ১৭তম আমরা সবাই মিলে বসবো, কথাবার্তা বলবো এজন্য আমি তাকে ডাকতে যাই । রুমে গিয়ে দেখি সে মশারির ভেতরে শুয়ে আছে। আমি ডাকলেও, সে ওঠেনি। তারপর আমি তার মশারি উঠালে সে আমাকে ধাক্কা দেয়। তখন আমি তাকে গাছের তক্তা দিয়ে তিন-চারটা বারি দেই। ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুনের কর্মী কি-না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে ভাইয়ের ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে আর কিছু না।হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৬তম ব্যাচের জুনায়েদ লামিমকে মিটিংয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। মিটিং ডাকা হয়েছিল ১৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কথা বলতে।মারধরের বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, আমাদের কোনো মতবিনিময় সভা ছিল না। যারা মারামারি করেছে তারা কেউ আমার অনুসারী না। আসলে তারা কারা আমি জেনে আপনাকে জানাবো।এ বিষয়ে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক মো. জিয়া উদ্দিন জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি। সবার সঙ্গে কথা বলে ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করে হল প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিবে।