চলে গেলেন ভাষাসংগ্রামী ডা. সাঈদ হায়দার

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ ভাষাসংগ্রামী ও শহীদ মিনারের অন্যতম উদ্যোক্তা ডা. সাঈদ হায়দার আর নেই।বুধবার (১৫ জুলাই) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে রাজধানীর উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার তোফাজ্জল হোসেন বলেন,ডা. সাঈদ হায়দার করোনায় আক্রান্ত হয়ে আমাদের হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।পরপর দুইবার করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে।সর্বশেষ তিনি বুধবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ডা. সাঈদ হায়দারের পারিবারিক সূত্র জানায়,তিনি করোনা থেকে মুক্ত হলেও পরবর্তীকালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়েছিলেন।বুধবার বাদ মাগরিব ডা.সাঈদ হায়দারের জানাজা শেষে উত্তরা চার নম্বর সেক্টরে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।সাঈদ হায়দার ১৯২৫ সালে পাবনা শহরে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজ ও কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা করেন।১৯৫২ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৫৮ সালে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক হেলথে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা নেন। তিনি ইপিআইডিসি’র চিফ মেডিক্যাল অফিসার ছিলেন। চাকরির ধারাবাহিকতায় বিটিএমসি থেকে ১৯৮৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন।তিনি ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।সেদিনের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ছাত্ররা প্রথম শহীদ মিনার গড়ে তোলেন। যার নকশা করেন বদরুল আলম।আর তাকে সহযোগিতা করেছিলেন সাঈদ হায়দার।যা ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ধবংস করে দেয়।

পেশাগত কাজের অবসরে বিজ্ঞান বিষয়ে নিবন্ধ লেখা ছিল তার প্রিয় নেশা।তার প্রথম বই ‘রোগ নিরাময় সুস্থ জীবন’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে।বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের পটভূমিতে তার লেখা ‘লোকসমাজ চিকিৎসাবিজ্ঞান’ নামের বৃহদাকারের বইটি বাংলা একাডেমি তিনটি খণ্ডে প্রকাশ করে।তার আত্মজৈবনিক স্মৃতিকথা ‘পিছু ফিরে দেখা’ কালপ্রবাহের এক বাস্তব আলেখ্য।ভাষা সংগ্রামে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সরকার তাকে ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত করে। তিনি ছিলেন একুশের চেতনা পরিষদের সহ-সভাপতি।

You might also like