জেলা পরিষদ নির্বাচনঃ সুনামগঞ্জে মুকুট ও হবিগঞ্জে মুশফিক জয়ী সিলেট ও মৌলীবাজারে নিরুত্তাপ পরিবেশে ভোটগ্রহণ

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ২য় জেলা পরিষদ নির্বাচন। সোমবার উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে সিলেটে বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় আগেই নির্বাচিত হয়েছেন আ’লীগ প্রার্থী এ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান ও মৌলভীবাজারের মিছবাহুর রহমান। বিভাগের অন্য ২ জেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সুনামগঞ্জে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নূরুল হুদা মুকুট পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন আর হবিগঞ্জে পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. মুশফিকুর রহমান। ৪ জেলায় সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হন। সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে ছিলো সিসি ক্যামেরা।
সিলেটঃ আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় সিলেটে অনেকটা নিরুত্তাপ ছিলো জেলা পরিষদ নির্বাচন। কেবল সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ শেষে বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী সিলেট জেলা পরিষদের ১ নম্বর মহিলা সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ২৫৯ ভোট পেয়ে রওশন জেবিন রুবা, ২ নম্বর মহিলা সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৩২ ভোট পেয়ে সুষমা সুলতানা রুহি, ৩ নম্বর মহিলা সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৮৫ ভোট পেয়ে হাসিনা বেগম, ৪ নম্বর মহিলা সংরক্ষিত ওয়ার্ডে তামান্না আক্তার হেনা ও ৫ নম্বর মহিলা সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৬০ ভোট পেয়ে মনিজা বেগম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।সাধারণ সদস্য পদে সিলেট জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডে মাওলানা মো. মুছাদ্দিক আহমদ, ২ নম্বর ওয়ার্ডে মতিউর রহমান মতি ৭০ ভোট, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে নাহিদ হাসান চৌধুরী ৩৭ ভোট, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মো. নাসির উদ্দিন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুল হামিদ ৪৩টি ভোট, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ ৭০টি ভোট, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মো. ফয়জুল ইসলাম ফয়ছল ৬৯টি ভোট, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে খসরুল হক খসরু ৪৭টি ভোট, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মোহাম্মদ শাহজাহান ৫৬টি ভোট, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সুবাস দাস, ১১ নম্বর ওয়ার্ড আফতাব আলী কালা মিয়া ৭২টি ভোট, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে মোস্তাক আহমদ পলাশ এবং ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ইফজাল আহমদ চৌধুরী ৬৫টি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

সুনামগঞ্জঃ সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রাথী ও জেলা আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট মোটরসাইকেল প্রতীকে ৬১২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকট প্রতিদ্বন্ধী আ’লীগ প্রার্থী জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট খায়রুল কবির রুমেন ঘোড়া প্রতীকে ৬০৪ ভোট পেয়েছেন। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ ফল ঘোষণা করেন।জেলার ১২টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভা মিলিয়ে মোট ভোটার ১ হাজার ২২৯ জন। এরমধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ১ হাজার ২১৮ জন। দু’টি ভোট বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে।সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নির্বাচিতরা হলেন, ১ নম্বর ওয়ার্ডে সেলিনা বেগম, ২ নম্বর ওয়ার্ডে বীনা জয়নাল, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ফৌজি আরা বেগম, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মোছা: নূরুন নাহার।সাধারণ সদস্য পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিতরা হলেন, ১ নম্বর ওয়ার্ডে চন্দন খান, ২ নম্বর ওয়ার্ডে মো. আব্দুস সালাম, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মো. মজিবুর রহমান, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মো. হোসেন আলী, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে দীপক তালুকদার, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে রায়হান মিয়া, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে টিকেন্দ্র চন্দ্র দাস, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মাহতাব উল হাসান, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মনিরুজ্জামান বারী, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে মো. মনির উদ্দিন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে মো. আব্দুল খালেক ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সাহেদ মিয়া।

হবিগঞ্জঃ হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী ডাঃ মুশফিক হোসেন চৌধুরী পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ৯৬১ ভোট। অপর দুই প্রতিদ্বন্ধী জাতীয় পার্টির মোল্লা আবু নাইম মোঃ শিবলী খায়ের ৭৭ ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নুরুল হক ৪৩ ভোট পেয়েছেন।সাধারণ সদস্য পদে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন, মোঃ ফেরদৌস মিয়া ২৭ ভোট, মোঃ ইমরান মিয়া ৮৬ ভোট, শেখ মুহাম্মদ শফিকুজ্জামান ১০৬ ভোট, মোঃ জসিম উদ্দিন ৩২ ভোট, মোঃ নূরুল আমিন ওসমান ৬৭ ভোট, মোঃ আব্দুল আজিজ ৩৫ ভোট, আলাউর রহমান সাহেদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত), সৈয়দ মোঃ শামীম আনোয়ার ৯৬ ভোট ও মোঃ আইউব আলী ৭৯ ভোট। সংরক্ষিত আসনে মহিলা সদস্য পদে যারা নির্বাচিত হলেন, শিরীনা আক্তার ২১৩ ভোট, শাম্মী আক্তার সুমি ৯৭ ভোট, রাহেলা খাতুন ২০০ ভোট। জেলা পরিষদের মোট ১১০৪ জন ভোটারের মধ্যে ১০৮৫ জন ভোট দেন। ৪ টি ভোট বাতিল হয়েছে। জেলায় ৯টি উপজেলায় একটি করে ভোট কেন্দ্র ছিল।

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা জানান, জেলা পরিষদের নির্বাচনে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ৭ উপজেলার ৭টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দু’জন প্রার্থীই সমান ভোট পান। পরবর্তীতে লটারীর মাধ্যমে হাসান আহমদ জাবেদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।সাধারণ সদস্য পদে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় হাসান আহমদ জাবেদ, কমলগঞ্জে অধ্যক্ষ হেলাল উদ্দিন, শ্রীমঙ্গলে মশিউর রহমান রিপন, কুলাউড়ায় বদরুল আলম নানু, জুড়ীতে বদরুল ইসলাম, বড়লেখায় আজিম উদ্দিন এবং রাজনগরে জিয়াউর রহমান।সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ উপজেলা থেকে হেলেনা চৌধুরী, সদর-রাজনগর উপজেলা থেকে রাকিবা সুলতানা তালুকদার ও বড়লেখা-জুড়ী-কুলাউড়া উপজেলা থেকে শিরিন আক্তার চৌধুরী মুন্নী নির্বাচিত হয়েছেন।মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের প্রার্থী মিছবাহুর রহমান ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এখানে শুধু ৭টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ৩টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে নির্বাচন হয়। ৭টি কেন্দ্রে ৯৫৬ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।তবে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী আগেভাগেই বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় এখানকার সাধারণ মানুষের মধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ ছিল না।মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, আমাদের সকল কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোট হয়।মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলায় ৭টি ভোট কেন্দ্র ছিল। এ গুলোর আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে ৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আনসাররা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন।

You might also like