‘টমটম’ গিলে খাচ্ছে সিলেটের বিদ্যুৎ
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ সরকারি অনুমোদন না থাকা স্বত্তেও সিলেটে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক। দিন দিন ইজিবাইকের সংখ্যা বাড়ছে। সিলেটে যে বাহনকে ‘টমটম’ নামে ডাকা হয়ে থাকে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরী ও আশপাশ এলাকায় অন্তত ৭শ’ টমটম রয়েছে। যা দৈনিক চার্জে গড়ে প্রায় ব্যবহার হচ্ছে ১৫শ’ থেকে ১৭শ’ ইউনিট বিদ্যুৎ।সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভা থাকাকালে ১০ হাজার ২০৪টি রিকশার প্লেটের অনুমতি দেওয়া হয়। ওয়ান ইলেভেনের সময় সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ আরও ১০ হাজার রিকশার প্লেটের অনুমতি দেয়। সব মিলিয়ে ২০ হাজার রিকশা চলার অনুমতি রয়েছে নগরীতে। কিন্তু এসব রিকশার প্লেটের বিপরীতে প্রায় ৫৫-৬০ হাজার রিকশা নগরীতে চলছে বলে জানা যায়।বিশ্বব্যাপী জ্বালানী তেলের সংকট দেখা দেওয়ায় সরকার বিদ্যুৎ অপচয় রোধে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে। ১৯ জুলাই মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে এলাকাভিত্তিক এক থেকে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
একই সঙ্গে ‘সাময়িক লোডশেডিং’র এ সময় সপ্তাহে একদিন পেট্রোলপাম্প বন্ধ থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ১৮ জুলাই সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জ্বালানি বিষয়ক এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের পর প্রতিমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।এ অনুযায়ী তালিকাও করা হয়। কিন্তু ব্যাটারীচালিত টমটম গাড়ি বন্ধ করা না হলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা কঠিন হয়ে পড়বে। লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে। কারণ ওইসব যানবাহন চলাচলে ব্যাটারি চার্জ দিতে হয়।এসব বাহনে প্রতিদিন ৬-৭ ঘন্টা চার্জ দিতে হয়। সিলেট নগরে কি পরিমাণ টমটম চলছে তার সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই নগর কর্তৃপক্ষের কাছে।সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মতিউর রহমান খান গণমাধ্যমকে বলেন, টমটম অবৈধ যানবাহন। আমরা টমটম চলাচল বন্ধ করতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কি পরিমাণ টমটম চলছে তা জানা নেই, তবে আমরা টমটম চলাচল বন্ধ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।তবে, বিভিন্ন স্ট্যান্ড থেকে পাওয়া তথ্যমতে, সিলেট নগরে ও বর্ধিত এলাকায় ৭’শ এর অধিক টমটম গাড়ি চলছে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা জানান, যে পরিমাণ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করছে, এর এক একটির ব্যাটারিতে ৬ ঘণ্টা চার্জ দিতে হয়। দৈনিক যে পরিমাণ ওইসব যানবাহন চলাচল করছে তাতে গড়ে ১৫শ থেকে ১৭শ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকে লেগে যাচ্ছে।
এদিকে, সিলেট শহরতলীতে এসব ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশার আধিক্য বেশি। মূল শহরে এবং তার বাইরে এখন প্রধান বাহনে পরিণত হয়েছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশা। আর এগুলোর বেশিরভাগ চালকই অদক্ষ। চালকদের অদক্ষতার কারণে প্রতিনিয়ত যানজটসহ সড়কে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা।সংশ্লিষ্টদের মতে, যানগুলোর প্রথম সমস্যা হলো, এগুলো রিচার্জ করতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হয়, আর দেশে যেখানে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে সেখানে এই যানগুলোতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার বিদ্যুতের অপচয় ছাড়া কিছুই নয়।