ঢাকা-সিলেট রুটে খালি আসন নিয়ে উড়াল দেয় বিমান!
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ বাংলাদেশ বিমানের ‘কৃত্রিম’ টিকিট সংকটের অভিযোগ নতুন নয়। ঢাকা-সিলেট রুটের যাত্রীরা টিকিট কিনতে গিয়ে পান না।আসন সংকট কিংবা ভাড়ার তারতম্যে ফিরতে হয় তাদের। দ্বারস্থ হন ট্রাভেলস এজেন্সির। নির্দিষ্ট মূল্যের চেয়ে চড়া দাম দিয়ে জরুরি প্রয়োজনে টিকিট কিনে যাত্রা করতে হয়। কিন্তু বিমানে ওঠার পর দেখা যায় যাত্রীশূন্য। ফলে যাত্রীদের মধ্যে অনেক সময় ক্ষোভ তৈরি হয় বেশিদামে টিকিট কিনে।বিমানের একযাত্রী এমন অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট (বিজি-৬০২) বোয়িং ৭৩৭ সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হয়। ১৬২ যাত্রী ধারণ ক্ষমতার বিমানে মাত্র ৯৭ জন ছিলেন। বিমানে খালি পড়েছিল ৬৫টি আসন। অথচ সিলেট থেকে বিমানের টিকিট চাইতে গেলে টিকিট পাননি অনেকে। পরে চড়া দাম দিয়ে ট্রাভেলস এজেন্সি থেকে যাত্রীদের অনেকে টিকিট কিনে নেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই যাত্রী বলেন, তিনি তার অসুস্থ মাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যেতে টিকিট কিনতে গেলে সংকট দেখানো হয়। পরে অধিক মূল্য দিয়ে টিকিট কিনে নেন।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোতে কোনো আসন খালি থাকে না। কেননা, তারা প্রথমেই বিমানের ভাড়া কমিয়ে রেখে আসন সংখ্যা কমে যাওয়ার সঙ্গে দাম বাড়ায়। অথচ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঠিক তার উল্টো। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স শুরুতে টিকিটের দাম বাড়িয়ে দেয়। এরপর আসন খালি থেকে যাওয়ায় শেষ মুহুর্তে গিয়ে দাম কমিয়ে আনা হয়।সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, মাথাভারি প্রশাসনের কারণে বিমানের এমন অব্যবস্থাপনা। শুরুতে টিকিটের মূল্য বাড়তি ধরা হয়। পরবর্তীতে সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে টিকিটের মূল্য কমিয়ে আনা হয়। তখন আর যাত্রী মেলে না। যে কারণে আসন খালি থাকে। তাছাড়া বিমানের অব্যবস্থাপনার কারণে যাত্রী কমার অন্যতম কারণ। কেননা, বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর কর্মীরা দায়িত্বের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যাত্রীদের মালামাল সংরক্ষণ ও সরবরাহ করেন। অপরদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মীরা অনেকটা উদাসীন। তারা যাত্রীসেবার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন না।
যাত্রীদের অভিযোগ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মীরা যাত্রীদের লাগেজ ও ব্যাগেজগুলো যেনোতেনোভাবে ফেলে রাখেন। যাত্রীর লাগেজের ব্যাপারেও তারা যত্মশীল না। সম্প্রতি এক নারী যাত্রীর লাগেজ ছুঁড়ে ফেলার কারণে ঝগড়াও বাঁধে। এ নিয়ে অভিযোগ করেও ওই নারী যাত্রী কোনো প্রতিকার পাননি। এ ব্যাপারে এয়ারলাইন্স ক্লাব অব সিলেটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও শিপার এয়ার সার্ভিসের সিইও খন্দকার শিপার আহমদ বলেন, বিমানে কোনো জবাবদিহীতা নেই। অন্য এয়ারলাইন্সগুলোতে অভিযোগ করলে এমডি পর্যন্ত চলে যায়। মূলতঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে জবাবদিহীতা থাকলে এমনটি হতো না। বিশেষ করে ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে তাদের উল্টো নীতি বিমানকে ক্ষতির মুখে ফেলছে। ফলে যাত্রীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অথচ অন্য এয়ারলাইন্সগুলো ঠিকই ব্যবসা করছে।বিষয়টি নিয়ে বিগত দিনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ভূমিকা নেয়ায় পরিস্থিতি ঠিক হয়েছিল। এখন আবারো তা ছন্নছাড়া হয়ে গেছে। ফলে অন্য বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোতে ভাড়া বেশি হলেও আসন খালি থাকে না।এ বিষয়ে জানতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জেলা ব্যবস্থাপক মো. মনসুর আহমদ ভূঁইয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার সেল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।