তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না : ফখরুল 

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।তিনি বলেন, যারা এর বিরোধিতা করবে তারা গণশত্রু বলে ধীকৃত হবে।তাদেরকে গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।এ সরকারকে বিদায় করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই আমাদের এখন সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ।শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিভাগীয় সমাবেশে ফখরুল এসব কথা বলেন।আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, তারা আবার নতুন করে খেলা শুরু করেছে। কোন খেলা? মামলা মামলা খেলা। কোন মামলা? গায়েবি মামলা।কোনো কিছু ঘটেনি। অথচ বলে দিলো ওখানে নাশকতা ঘটেছে। সেই নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়। তারা জানেই না কোনো কিছু। এভাবে গত ১৪টি বছর ধরে তারা এভাবে এই দেশের মানুষের ওপরে অত্যাচার নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে।

নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন,আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ফ্যাসিস্ট দানবীয় সরকারকে পরাজিত করতে হবে। তারা আমাদের স্বপ্নগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাদেরকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।ফখরুল বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলেছি অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।ঝাড়ি-ঝুড়ি খাটবে না। পুলিশ দিয়ে, আমলা দিয়ে রাতের অন্ধকারে সবকিছু পাল্টিয়ে দেবা; ইবিএম করবা ওটা হবে না…। জনগণ তার ভোট এবার দেখে নেবে। কড়ায়-গন্ডায় বুঝে নেবে। সেই ভোট হতে হবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা একটি নতুন যুদ্ধ শুরু করেছেন। আজ এ যুদ্ধ আপনাদের নতুন যুদ্ধ। এই যুদ্ধ আপনাদের অধিকার ফিরে পাবার যুদ্ধ। এই যুদ্ধ আপনাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাবার। এই যুদ্ধ আপনাদের ভাতের অধিকার ফিরে পাওয়ার। সিলেটের ইতিহাস হচ্ছে যুদ্ধের ইতিহাস। আপনাদের ইতিহাস যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস। আজকে সিলেটের পুণ্যভূমি থেকে যুদ্ধ শুরু হলো। এই যুদ্ধে আমরা অবশ্যই জয়ী হব।বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভোলা আব্দুর রহিম, নূরে আলম নারায়ণগঞ্জে শাওন এবং মুন্সীগঞ্জে শাওনকে এ সরকারের পুলিশ এবং গুন্ডাবাহিনী হত্যা করেছে। তারা মনে করছে আগের মতো হত্যা করলে সবকিছু থেমে থাকবে। কিন্তু থেমে থাকেনি উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। অনুপ্রাণিত হয়েছে এবং একটার পর একটা বিভাগীয় সমাবেশ বেশি জনসমাগমের মাধ্যমে সফল হচ্ছে।সব রাজনৈতিক দল ও মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, আসুন এখন আর বসে থাকার সময় নেই। সব রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান আমরা সবাই এক হয়ে যেভাবে ১৯৭১ সালে লড়াই করেছিলাম, সংগ্রাম করেছিলাম। সেভাবে এই ভয়াবহ দানব সরকারকে পরাজিত করে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করব। জনগণের রাষ্ট্র নির্মাণ করব।

জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের দাবিতে বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে সমাবেশ করছে বিএনপি। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর বিভাগীয় সমাবেশ সম্পন্ন করেছে দলটি।গণসমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ফজলুর রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা সিনা রুশদী লুনা, উপদেষ্টা ডা. এনামুল হক, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান জীবন, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণসহ বিভাগের জেলাগুলোর শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন।

You might also like