তাহিরপুরে এক হিন্দু নারীকে উচ্ছেদ করতে শারীরিক নির্যাতন-দোকানঘরে লুটপাঠ
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় ৫ বছরের জন্য লীজকৃত জায়গা থেকে এক অসহায় পরিবারকে উচ্ছেদের ষডযন্ত্র,মারপিঠ ও দোকান ঘরে লুটপাঠ করায় র্যাব বরাবরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গত ৩১/৫২০২০ইং তারিখে বালিজুরী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও একই গ্রামের দাঙ্গাবাজ রেনু মিয়া,তার ভাই মনু মিয়া,হারুণ মিয়া,আতিকুল,রেনু মিয়ার ছেলে শুভ ও শরিফ,একই গ্রামের সচীন্দ্র বমর্ণের ছেলে সত্যরঞ্জন বর্মন,অভি রঞ্জন বর্মণ ও নিধান বর্মণ গংদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের বড়খলা গ্রামের জিতেন্দ্র পালের স্ত্রী বিনয় রানী পাল।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিনয় রানী পাল সংখ্যালঘু পরিবারের একজন অসহায় নারী। তিনি গত ১১/১০/২০১৯ সালে বড়খলা মৌজার ২৪৫ ও ২১৭ দাগে যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী রয়েলিটি ঘাটের পাশে ৬৫ শতক জায়গা আমন রকম ভূমি একই গ্রামের যোগেশ বর্মনের ছেলে নকুল বর্মণ,সকুল ও রনজিৎ বর্মণ এবং মৃত পুতুল বমর্ণের ছেলে শিবা ও সুজন বর্মণ এই ৫ জনের নিকট হতে বালিজুরী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ রেনু মিয়ার উপস্থিতিতে তাকে স্বাক্ষী রেখে স্বাক্ষরসহ ষ্টাম্পে উভয়পক্ষের স্বাক্ষর নিয়ে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে জায়গাটুকু বন্দোবস্ত নিয়ে ভোগদখল করে আসছিলেন।
জায়গাটুকু বন্দোবস্তের একমাস পরে বন্দোবস্ত জায়গাতে বালু,পাথর ও কয়লার ব্যবসায়ীরা রয়েলিটি ঘাট হিসেবে তার জায়গাটি মৌখিকভাবে প্রতিবছর একলাখ টাকা দিবে মর্মে অঙ্গীকার করা হয়। কিন্তু ইউপি সদস্য মোঃ রেনু মিয়া স্থানীয়ভাবে শক্তিশালী ও লোকবলের কারণে ব্যবসায়ীদের নিকট হতে প্রতিবছরে জায়গার ভাড়াবাবত একলাখ টাকা করে দুই বছরের দুই লাখ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাধ করেন। বিনয় রানী পাল ইউপি সদস্য রেনু মিয়ার নিকট জায়গার টাকা ব্যবসায়ীদের নিকট হতে তুলে নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে দাঙ্গাবাজ রেনু মিয়া,তার ভাই মনু মিয়া,হারুণ মিয়া,আতিকুল,রেনু মিয়ার ছেলে শুভ ও শরিফ,একই গ্রামের সচীন্দ্র বমর্ণের ছেলে সত্যরঞ্জন বর্মন,অভি রঞ্জন বর্মণ ও নিধান বর্মণ গংরা মিলে বিনয় রানী পালকে ৪/৫ বার শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং প্রাণে মারার জন্য প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে আসছে।
সর্বশেষ গত ১৫ মে বন্দোবস্তকৃত জায়গাতে বিনয় রানী পালের একটি ছোট দোকানঘরে তারা হামলা,ভাংচুর চালিয়ে দোকান ঘরের মালামাল লুটপাঠ করে নগদ ৮০ হাজার ব্যবসার টাকসহ কাশি ও মোরগ ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এই নারীকে মারপিঠ করে। পরবর্তীতে বিনয় রানী পালের স্বজনরা ঘটনার দিন বিকেলে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে বিনয় রানী পালকে ভর্তি করেন। বর্তমানে দাঙ্গাবাজ ইউ/পি সদস্য মোঃ রেনু মিয়া গংদের অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে বিনয় রানী পাল তাদের প্রকাশ্যে হুমকিতে জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। জায়গার দুই লাখ টাকা এবং দোকান ঘরে হামলা, মালামাল ও নগদ টাকা আত্মসাধকারী এই দাঙ্গাবাজ ইউপি সদস্য রেনু মিয়া গংদের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মোঃ রেনু মিয়া,তার ভাই ও ছেলে দ্¦ারা ঐ অভিযোগকারী হিন্দু নারীর উপর অত্যাচার নির্যাতন দোকান ঘরে হামলা ভাংচুর ও টাকাপয়সা লুটপাঠের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।এ ব্যাপারে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান র্যাব-৯ এর সুনামগঞ্জ অঞ্চলের কোম্পানী কমান্ডার মোঃ ফয়সল আহমদ অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,বিষয়টি র্যাব সদস্যা তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।