তাহিরপুরের যাদকাটা নদীর ইজারা সুপ্রীম কোর্ট বৈধ ঘোষনায় লাখো শ্রমিকের মাঝে আনন্দের বন্যা
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা বালি মহালের ইজারা বৈধ বলে ঘোষনা করেছেন বাংলাদেশের সর্বোচ্ছ আদালতের সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৫ সদস্যের ফুল বেঞ্চ। মঙ্গলবার সকালে অইেশ পর্যবেক্ষণ শেষে বিজ্ঞ আদালত এই রায়টি ঘোষনা করেন।সুত্র জানায়, চলতি বছরের ২৩ মার্চ সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা কার্যক্রমে অংশ গ্রহন করেন কিছু প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মেসার্স নিলম এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স আজাদ হোসেন ভ্যাট ট্যাক্সসহ প্রায় ১০ কোটি টাকায় ইজারা প্রাপ্ত হন।ইজারাপ্রাপ্ত হওয়ার সাথে সাথে ইজারামুল্য বাবদ প্রায় ১০ কোটি টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দেন কিন্তু একটি পক্ষ তাদের স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। রীটের আবেদন শুনানী শেষে জেলা প্রশাসনের দেয়া ইজারাবন্দোবস্ত এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। ফলে ইজারাদারগণ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে আবেদন করেন এবং এলাকার লাখো শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়ার দাবী জানান। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে ৫
সদস্যের পূণার্ঙ্গ বেঞ্চ আবেদনের শুনানীর দিন ধার্য্য করেন মঙ্গলবার। উভয় পক্ষের বিজ্ঞ কৌসূলীদের উপস্থিতিতে যুক্তি তর্ক উপস্থাপনের পর শুনানী শেষে প্রধান বিচারপতি জেলা প্রশাসনের দেয়া ইজারাবন্দোবস্ত বৈধ বলে ঘোষনা দেন। ফলে আবারও প্রমানিত হলো অসহায় দরিদ্র মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহের জন্য সরকার ও বিচারবিভাগ আন্তরিক। যাদুকাটা নদী খুলের দেয়ার দাবীতে বিভিন্ন সময় স্থানীয় কর্মহীন শ্রমিকরা আন্দোলন সংগ্রামও করেছে।সুপ্রিম কোর্টের রায়ের খবর পেয়ে লাখো শ্রমিকের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। স্থানীয় লাউড়গড় গ্রামের শ্রমিক রহিম জানান, দীর্ঘ দুই বছর ধরে আমাকের কাম কাজ নাই। খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছি। হাইকোর্ট থেকে যাদুকাটা নদীর উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় আমরা খুবই খুশি হয়েছি। আবার আমাদের আয় রোজগারের পথ সুগম হবে। আমরা আর না খেয়ে থাকবো না। যাদুকাটা নদী খুলে দেয়ার জন্য সরকার ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ সবাইকে অভিনন্দন জানাই।
এ ব্যাপারে ইজারাদারদের পক্ষে সুনামগঞ্জ জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি মো. সেলিম আহমদ জানান, সীমান্ত এলাকার মানুষের একমাত্র জীবন জীবিকার কর্মস্থল হলো যাদুকাটা নদী। লাখো বেকার যুবক-যুবতীর আয় রোজগারের পথ বন্ধ ছিল। দেশের সর্বোচ্চ আদালত দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কথা বিবেচনা করে যুগান্তকারী রায় প্রদান করেছেন। আবারও মুখরিত হয়ে উঠছে যাদুকাটান নদীর লাখো শ্রমিকের পদচারনায়। বন্ধ হবে অবৈধভাবে নদীর পাড়কাটা।এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, যাদুকাটা নদীর ইজারা বৈধ ঘোষনা করায় লাখো বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার সাথে সাথে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।