দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান সালামের বিরুদ্ধে ৯ সদস্যের অনাস্থা

শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী

সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুৃনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুর কালামের বিরুদ্ধে জাল জালিয়াতিসহ একাধিক প্রকল্প এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় প্রকল্প সমূহ্রের অনিয়ম ও র্দূনীতির বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ছালেক উদ্দিন ও পরিষদেও ৯জন ইউপি সদস্যর অনাস্থা জানিয়ে অপসারনের দাবীতে পৃথক পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ছালেক উদ্দিন গত ৬জুন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের নিকট আলাদা আলাদা কয়েকটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়াও পরিষদের ৯জন ইউপি সদস্যরা চলতি বছরের গত ৯জুন ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এবং তার অপসারনের দাবি জানিয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আরো একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে তিনটি প্রকল্প বরাদ্দ করা হলে প্রথম পর্যায়ের বরাদ্দের চার লাখ ৮ হাজার টাকার এফআইভিডিবির স্কুল হতে শাহীন মিয়ার বাড়ির সামনা পর্যন্ত মাঠি ভরাটের এই কাজে ৫১জন হতদরিদ্র দিনমুজুরের কাজ করার কথা থাকলেও পাশর্^বর্তী ইউনিয়ন থেকে দিনমুজুর শ্রমিক এনে কম মুজুরীতে রাস্তার কাজ করান। বাহির থেকে শ্রমিক আনার বিধান নীতিমালায় না থাকলেও চেয়ারম্যান নুর কালাম বাহিরের শ্রমিক এনে প্রতি হাজার ঘনফুট হিসেবে মোট একলাখ ত্রিশহাজার টাকার মাটি কেটে বাকি দুইলাখ ৭৮হাজার টাকা আত্মসাধ করেন। অপরদিকে ৯নং ওয়ার্ডের হাসকুড়ি গ্রামের গরুর ঘাটের রাস্তায় ভাঙ্গায় মাটি ভরাট প্রকল্পের কৌলাউনির বাঁেধর জন্য দু”লাখ টাকা। এই প্রকল্পে স্থানীয় শ্রমিককে চারদিনে ৫ হাজার ঘনফুট মাটি কেটে ইউপি সদস্য খয়ের মেম্বারের নিকট হতে ২০ হাজার টাকা উৎকোচ নেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। এই প্রকল্পে ২৫জন শ্রমিক দিয়ে দৈনিক কাজ করানোর কথা থাকলেও চেয়ারম্যান এই দিনমুজুরদের তাদের আধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। তিনি প্রতিহাজার ঘনফুট ৪ হাজার টাকা ধরে মাটি কেটে এই ভাঙ্গায় বিশহাজার টাকায় দায়সারাভাবে ৫ হাজার ঘনফুট মাটি কেটে বাকি একলাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাধ করেছেন। একই অর্থবছরে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পে পূর্ব বীরঁগাও ইউনিয়নের (১) ৩নং ওয়ার্ডের বাবনগাঁও গ্রামের শাহদামরী দোকানের সামরে পাকা রাস্তা হতে শাহদামরী ইজ্ঞিনিয়ারিং ওর্য়াসপ হয়ে পরিবার, স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনাকেন্দ্র ঘষে বাবনগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে সুন্দর আলীর বাড়ির সামনে পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত মোট টাকার পরিমান ৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। এই প্রকল্পে স্থানীয় ১১২জন হতদরিদ্র দিনমুজুর দিয়ে কাজ করনোর নিয়ম থাকলেও চেয়ারম্যান এক্রেভেটর(ভেকু মেশিন) দিয়ে মাটি কেটে ট্রাক দিয়ে মাটি পরিবহন করার ফলে শ্রমিকরা তাদের মুজুরী করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। অভিযোগে জানা যায় এই প্রকল্পে একলাখ ৯৬হাজার টাকার মাটি কাটলেও বাকি ৭লাখ টাকা আত্মসাধ করেছেন। অভিযোগকারী ছালেক আহমদ বার বার পিআইও অফিসে গিয়ে এই প্রকল্পের চেয়ারম্যানের নাম জানার চেষ্টা করলেও পিআইও ও তার সহকারীরা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন বলে তিনি অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন।

অপরদিকে ইউনিয়নের ৯জন ইউপি সদস্যরা বর্তমান চেয়ারম্যান মো. নুর কালামের ক্ষমতার অপব্যবহার ও কর্তব্য অবহেলা, স্বজনপ্রীতি ও অসদাচরনের কারণে পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এর সভাপতিত্বে গত ৮ জুন সভায় সর্বসম্মািতক্রমে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহিত হয় এবং তার অপসারনের জন্য সবাই মিলে নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বদলিজনিত কারণে তদন্ত কাজটি থমকে যায়। পরবর্তীতে এই দুটি অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব আলাদাভাবে উপজেলা প্রশাসন থেকে উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার ও উপজেলা কৃষি অফিসারকে দেয়া হয়। তদন্তকারী অফিসারগণ অভিযোগকারীদের না জানিয়ে ঘটনাস্থলে না গিয়েই বর্তমান চেয়ারম্যান নুর কালামের সাথে গোপনে পরামর্শ করেই তদন্তকাজ ফাইলবন্দি করে রেখেছেন অভিযোগ উঠেছে।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুর কালাম জানান, সাবেক চেয়ারম্যান ছালেক উদ্দিন আগামী নিার্বচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করার লক্ষ্যেই আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করতেই আমার বিরুদ্ধে এমন মনগড়া অভিযোগটি দায়ের করেছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্যে প্রনোদিত।এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার ও তদন্তকারী কর্মকর্তা আতিকুর রহমান জানান বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

You might also like