দোয়ারাবাজারে চুনাপাথর আমদানি বন্ধঃ হতাশ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ ৫ মাসের মাথায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আবারও শুল্ক বৃদ্ধির কারণে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ থাকায় হতাশায় ভুগছেন ছাতক-দোয়ারাবাজারের ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি বেকার হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার পাথর ও বারকি শ্রমিক। ২ ডলার যোগ করে প্রতি টন পাথরে মোট ১৩.৭৫ ডলার শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে গত ১২ দিন থেকে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার চেলা এলসি স্টেশন (লাইমস্টোন) দিয়ে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
একই ইস্যুতে গত ১৬ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহকাল চেলা স্টেশন দিয়ে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ ছিল। তা সত্বেও প্রতি টন চুনাপাথর ও পাথরে ১ ডলার বাড়িয়ে ১১.৭৫ ডলার শুল্ক নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ নিয়ে আমদানিকারকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে ৫ দিন পর আলোচনার ভিত্তিতে পুনরায় পাথর আমদানি শুরু হয়। পরবর্তীতে গত ৪ জানুয়ারি এক চিঠির মাধ্যমে আবারও টন প্রতি ২ ডলার বাড়িয়ে ১৩ দশমিক ৫০ ডলার বা তদূর্ধ্ব শুল্ক আরোপ করা হয়, যা গত ৮ জানুয়ারি থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ওই বর্ধিত নতুন শুল্ক কার্যকর নিয়ে ১ জানুয়ারি সোমবার স্থানীয় আমদানিকারকদের সঙ্গে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সভা হয়। সভায় ব্যবসায়ীরা বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানি বন্ধের ঘোষণা দেন।
চেলা এলসি স্টেশনে নৌকা দিয়ে চুনাপাথর পরিবহনকারি আব্দুল মোতালিবসহ অন্যরা বলেন, ‘বুধবার থেকে এলসি স্টেশন বন্ধ থাকায় আমাদের কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে ছাতক (চেলা-ইছামতি) লাইমস্টোন ইমপোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘“এনবিআর ভারত থেকে পাথর ও চুনাপাথর আমদানির ওপর অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু প্রতি টনে অতিরিক্ত শুল্ক বৃদ্ধি করে। ওই বাড়তি শুল্ক দিয়ে পাথর আমদানি করতে হলে আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। তাই শুল্ক কমানোর দাবিতে সম্প্রতি চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তা বহাল থাকবে।’
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট সিলেটের কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘২০০০ সালের শুল্ক বিধিমালা অনুসারে পাথরের শুল্কমূল্য ধরা হয়। সব স্টেশনেই পাথরের মূল্য ১৩, ১৪, ১৫ ডলার নির্ধারিত আছে।
শুল্ক কমানোর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের আমদানি বন্ধের ব্যাপারে কাস্টমস কমিশনার বলেন, ‘তারা বন্ধ করলে আমাদের কিছু করার নেই। আইনগতভাবে ১৩ ডলারের নিচে নামার কোনো উপায় নেই। এটা আমি আমদানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সবাইকে বুঝিয়েছি।’