নবীগঞ্জে ঝাঁড়ফুকের নামে চলছে রমরমা বাণিজ্য ভূঁয়া কবিরাজ পারভীন হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা!
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ পারভীন বেগম। উপজেলার কাজিরগঞ্জ বাজারস্থ তহশীল অফিসের অফিস সহায়ক। বাড়ি সদর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে। স্বামীর বাড়ী বানিয়াচং উপজেলার উমরপুর গ্রামে হলেও বর্তমানে রসুলগঞ্জ বাজারের পাশে নতুন বাড়ি করে এখানেই বসবাস করছেন দু’জন। সরকারি চাকুরির পাশাপাশি পারভীন ঝাঁড়ফুক করে নবীগঞ্জ উপজেলাসহ আশেপাশের গরীব অসহায় লোকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এখানে স্বামী লুৎফর রহমানসহ এলাকার কতিপয় অসৎ লোকজনের সহায়তায় গড়ে তুলেছেন এক সিন্ডিকেট। ওই বাড়িতে কয়েকজন যুবতীও রয়েছে যারা নানা অপকর্মের পাশাপাশি পারভীনের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।
নবীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা সাগর আহমেদ জানান, পারভীনের হঠাৎ পরিবর্তন দেখে এলাকার মানুষ হতভম্ভ। কৌতুহল জাগে মানুষের মাঝে। প্রতিদিন আনাগোনা ঘটে অপরিচিত লোকজনদের। হাতে পানির বোতল নিয়ে মানুষের আনাগোনায় আগ্রহ বেড়ে যায় দেখার জন্য। তখনই এলাকায় জানাজানি হয় পারভীন বেগম গায়েবী কি পেয়েছেন। মানুষজন বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গেলে পানি পড়ে দিলেই অনেক জটিল সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। এক্ষেত্রে স্থানীয় একটি দালালচক্র রয়েছে তার এই অপকর্মের নেপথ্যে। তাদের কাজ হলো আগত লোকদের উৎসাহিত করা। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সরেজমিন অনুসন্ধানে রোগী সেজে যাওয়া হয় কবিরাজ পারভীন বেগমের বাড়িতে। বিভিন্ন প্রসঙ্গে আলোচনা হয় তার সাথে। একপর্যায়ে পারভীন জানতে পারেন সাংবাদিক। জানার পরই রেগে যান। তিনি হুংকার দিয়ে বলেন, পুলিশ আসলেও ওয়ারেন্টের কাগজ নিয়ে আসতে হবে। তারা তো সরকারী লোক। পরণে সরকারী পোষাক থাকে। আপনারা তো সাংবাদিক, সরকারী লোক না। কোন সাহসে আসলেন। এমন অসংখ্য কথার গ্যাঁড়াকলে কোন তথ্য দিতে আগ্রহী হননি তিনি। এ সময় দেখা যায় স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু দালাল তার আস্তানায় বসা। গ্রামের সহজ সরল বিপদগামী মানুষজন নানা সমস্যা নিয়ে হাজির। প্রায় শতাধিক লোক হবে। প্রথমেই ১০ টাকা দিয়ে রোগীর নাম খাতায় এন্টি করতে হয়। পরে কবিরাজের নিজস্ব দোকান থেকে ২০ টাকায় পানির আর ৪০ টাকায় তেলের বোতল কিনে দিতে হয় কবিরাজ পারভীনের কাছে। কবিরাজ ঝাঁড়ফুক দিয়ে পানির বোতল হাতে ধরিয়ে দেন। চিকিৎসা বাবদ কোন টাকা পয়সা না নিলেও কৌশলে আদায় করছেন হাজার হাজার টাকা। তার আস্তানায় রাখা একটি দানবাক্সে যার যার মতো করে দান করতে হয় টাকা-পয়সা। এভাবেই প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন কবিরাজ পারভীন। এর একটি অংশ স্থানীয় দালালদের মাঝে বন্টন করে দেয়া হয়।