নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রমশ উর্ধ্বগতিঃ ক্রেতার কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা জিনিসপত্রের উচ্চমূল্যে দেশের কম ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষদের বিপাকে ফেলেছে। এটি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগও কাজে আসছে না।
রমজানের বাকি আর মাত্র কিছুদিন। তার আগে অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। পণ্যের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই বাজারে, বরং ঊর্ধ্বমুখী। এতে ক্রেতাদের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ, বেড়েছে বাজার ভীতি। এদিকে বর্তমান অর্থমন্ত্রীও স্বীকার করেছেন জিনিসপত্রের বাড়তি দাম বা মূল্যস্ফীতি নিয়ে অর্থনীতিতে কিছুটা অস্বস্তি আছে।
সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। কিন্তু ব্যয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এরূপ পরিস্থিতিতে সিলেটে নিত্যপণ্যের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একদিকে বেড়েছে পণ্যের দাম, অন্যদিকে কমেছে চাহিদা।
গত ২ বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিত্যপণ্যের মধ্যে চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে মাছ, মাংস এবং সবজির দাম বেড়েছে লাগামহীনভাবে। এ অবস্থায় সবচেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার। আয়ের তুলনায় ব্যয়ের পরিমাণ বাড়াতে পরিবারগুলোতে তৈরি হয়েছে বাজারভীতি।
সিলেট নগরির একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত জনৈক শিক্ষক বলেন, কয়েক বছর আগেও ২০ হাজার টাকা বেতনে পরিবারে সব ধরণের খরচ ও মাস শেষে কিছু টাকা সঞ্চয় করা যেতো। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে পরিবারের চাহিদা পূরণ করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। যদি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য এভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে মানুষের জীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব আরও গভীর হবে। আপাতত খরচ কমাতে যথাসম্ভব বাজার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছি।
জনৈক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, নিয়মিত ব্যয় বাড়লেও আয় আগের পরিমাণই আছে। অবস্থা এমন কাউকে কিছু বলার বা চাওয়ার মতো অবস্থাও থাকে না। প্রতিমাসে এখন নিজ বেতন খরচের পরেও ধার-দেনা করে চলতে হয়।
নগরিতে রিক্সা চালান এমন একজন রিকশাচালক বলেন, এই সময়ে বেঁচে থাকাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন যা ইনকাম করি তা দিয়ে পরিবার চালানো কষ্টকর। আগে খোলাবাজারে ১০ টাকার তেল কেনা যেত, এখন তাও মিলেনা। একই অবস্থা সবজি বাজারে। আগে যে টাকায় ব্যাগভর্তি সবজি কিনা যেত এখন সে টাকায় ব্যাগের এক কোনাও ভরছে না। আর আমিষের চাহিদা পূরণে মাছ-মাংসের দাম তো আগে থেকেই নাগালের বাহিরে।
ক্রেতাদের দাবি রমজানের আগে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ নেয়া দরকার। সেজন্য সরকারকে বাজার মনিটরিংয়ের দিকে আরো জোর দিতে হবে।