নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ গোয়াইনঘাটে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ভেঙে পড়ে পঙ্গু হওয়ার পথে এক মহিলা

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের দেয়াল ভেঙে পড়ে মায়ের কোলে থাকা ২ বছর বয়সী সাব্বির আহমদ নামের শিশু প্রাণে রক্ষা পেলেও মায়ের পা ভেঙে গেছে। স্বপ্না বেগম (৪০) নামের ওই মহিলাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত শুক্রবার সকালে উপজেলার পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নের পুর্নানগর গ্রামে মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ইউএনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে নির্মাণ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা।তারা বিভিন্ন কৌশলে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদেরও ম্যানেজ করার চেষ্টা চালায়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আহত স্বপ্না বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর তার কাছে হস্তান্তরের কয়েকদিন যেতে না যেতেই ফাটল দেখা দেয়। সেটি বিগত বন্যার অনেক আগে। তখন ৫ সন্তানকে নিয়ে তার এই ঘরে থাকা ঝঁকিপূর্ণ জানালে নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা সিমেন্ট দিয়ে ফাটল ভরে দিয়ে যায়। শুক্রবার সকালে স্বপ্না বেগম তার শিশু বাচ্চাকে কোলে নিয়ে দুধ খাওয়াচ্ছিলেন। এ সময় কোনকিছু বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ তার উপরে ঘর ভেঙে পড়ে। স্বপ্না বেগম দ্রুত কোল থেকে বাচ্চাকে ছুঁড়ে ফেলেন উঠানে। এতে শিশু সাব্বির মৃদু আহত হয়। স্বপ্না বেগম বাচ্চাকে রক্ষা করলেও তিনি রক্ষা পাননি। দেয়াল পড়ে গিয়ে স্বপ্নার পা ভেঙে যায়।স্বপ্না বেগম জানান, ঠিকাদারকে তখনই বলছিলেন কাজ নিম্নমানের হচ্ছে। তা আমলে নেয়নি। গরীব মানুষ ঘর পাচ্ছি তাতেই খুশি ছিলাম। এখন দেখি সেই ঘরই যম হিসেবে চলে আসছে।এদিকে, স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, যাতে বিষয়টি ছড়িয়ে না পড়ে এর জন্য দ্রুততম সময়ে মেরামত করে দেয়া হয়।
যে ঘরটি ভেঙ্গে পড়ে স্বপ্না আহত হন তার ঠিকাদার রিপন মিয়া। তিনি দাবি করেন, ঘর ভেঙ্গে গেছে খবর পেয়ে শনিবার মেরামত করে দিয়ে এসেছেন। ঠিকাদার রিপন দাবি করেন, এর আগে কেউ ফাটল দেখা দিয়েছে এমন তথ্য জানায়নি।

গোয়াইনঘাটের ইউএনও তাহমিলুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ভেঙে পড়ে বাসিন্দা আহত হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি দাবি করেন প্রতিবেশী কেউ একজন বিদ্যুতের লাইনের উপরের বাঁশ কাটতে গেলে বাঁশ পড়ে ঘর ভেঙে গেছে বলে শুনেছেন। তবে কার বাঁশ পড়েছিলো ভয়ে কেউ জানাচ্ছে না বলে জানান। এছাড়া আহত মহিলার দাবি ঘর হস্তান্তরের পরপরই ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছিলো এই অভিযোগ সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তাহমিলুর রহমান বলেন, বিষয়টিকে রঙ দেয়ার চেষ্টা চলছে।

You might also like