নেত্রকোণায় দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুক্তি রানীর ঘাতকের ফাঁসির দাবীতে সুনামগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ নেত্রকোনা জেলার বারহাট্রা উপজেলার ছালিপুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুক্তি রানী বর্মণকে বখাটে মো. কাওছার মিয়া কর্তৃক কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এবং গ্রেপ্তারকৃত কাওছারের ফাঁিসর দাবীতে সুনামগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।সোমবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ, যুব পরিষদ এবং বাংলাদেশ ক্ষত্রিয় বর্মণ সম্প্রদায় ইতিহাস অনুশীলন ও কল্যাণ পরিষদ সুনামগঞ্জের যৌথ আয়োজনে শহরের আলতাব উদ্দিন স্কয়ার (ট্রাফিক পয়েন্টে) এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার লোকজন অংশগ্রহন করেন।
সুনামগঞ্জ জেলা হিন্দু পরিষদের সভাপতি বিকাশ রঞ্জন সরকারের সভাপতিত্বে ও যুব পরিষদের সভাপতি অমর চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে এ সময় বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ রায়, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি সুনামগঞ্জ জেলা শাখার আহবায়ক শিক্ষাবিদ গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক উদয় রায়, পৌর কাউন্সিলর চঞ্চল কুমার লৌহ, সুনামগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও মোহনা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি কুলেন্দু শেখর দাস, জেলা উদীচীর সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সুনামগঞ্জ জেলা হিন্দু পরিষদের সাধারন সম্পাদক বিপ্লব রায়, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পীযূষ চক্রবর্তী, সজীত চন্দ, বাংলাদেশ ক্ষত্রিয় বর্মণ সম্প্রদায় ইতিহাস অনুশীলন ও কল্যাণ পরিষদ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক গৌরাঙ্গ বর্মণ, সুধীর চন্দ্র বর্মণ, বীর লাল বর্মণ,অসিম চন্দ্র বর্মণ, ভজন চন্দ্র॥ সেন,সুবোধ বর্মণ, এড. রতিশ চন্দ্র বর্মণ, প্রিতুষ বর্মণ, সুনামগঞ্জ জেলা হিন্দু যুব পরিষদের সাধারন সম্পাদক সঞ্জয় আচার্য্য,ি দলীপ চক্রবর্তী,তুর্য দাস রায়, বিধান বণিক,বিপুল চক্রবর্তী,রনধীর দাস, রেন্টু দাস, কানন দাস, রুবেল চক্রবর্তী, বিপ্লব দাস, প্রাণগোপাল দেব, মলয় তিবেদী,রাজিব রায় ,শ্যামল সরকার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন গত ২রা মে প্রতিদিনের ন্যায় নেত্রকোনা জেলার বারহাট্রা উপজেলার ছালিপুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুক্তি রানী বর্মণ স্কুল ছুটির পর নিজ বাড়ি প্রেমনগরে যাওয়ার পথে ওৎপেতে থাকা বখাটে কাওছার মিয়া ধারাঁলো অস্ত্র দা নিয়ে তার গতিরোধ করেন এবং ছাত্রীর শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় বারহাট্রা স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে নিয়ে যাওয়ার পর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তার অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাস্তায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত মুক্তি রানীর পিতা নিখিল চন্দ্র বর্মণ(কীর্তন) গত ৩ মে ঘাতক মো. কাওছারকে আসামী করে বারহাট্রা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৩.তারিখ -০৩.০৫.২০২৩ ইং।এমন আলোচিত ঘটনার খবরে ঘটনার কিছুক্ষণ পরই নেত্রকোনা পুলিশ প্রশাসন ঘাতক কাওছারকে পাশ^বর্তী একটি জঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করে। অবিলম্বে এই ঘাতকের দৃষ্টান্তমূলক ফাঁসির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট জোর দাবী জানান নেতৃবৃন্দরা। পাশাপাশি বরগুনা জেলার বামনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু কর্তৃক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিয়ে কটুক্তির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং এই সাম্প্রদায়িক ও স্বাধীনতা বিরোধী চেয়ারম্যানের অপসারণের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানান। নেতৃবৃন্দরা নেত্রকোনা আইনজীবি সমিতির সকল আইনজীবিরা এই ঘাতক নরপগুর পক্ষে আদালতে দাড়াঁবেন না এমন ঘোষনায় আইনজীবিদের মানববন্ধন থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
উল্লেখ্য দীর্ঘদিন ধরেই এই বখাটে মো. কাওছার মিয়া সাংস্কৃতিমনা দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুক্তি রানী বর্মণকে স্কুল থেকে আসা যাওয়ার পথে উত্যক্ত করে আসছিল। এই ঘটনাটি মুক্তি তার পরিবারের অভিভাবকদের জানানোর পর তারা ঘটনাটি বখাটের পিতামাতাকে জানালে সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে এবং গত ২রা মে মুক্তি রানী বর্মণকে স্কুলের পাশে রাস্তায় পেয়ে ধাঁরালো অস্ত্র দিয়ে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।