নেপালে বন্যা-ভূমিধসে নিহত ৭৭
আন্তজার্তিক ডেস্ক
সত্যবাণী
নেপাল: দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নেপালে গেল তিনদিনের ভারি বর্ষণের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় প্রাণ হারানোদের সংখ্যা বেড়ে ৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে। গেল বুধবার (২০ অক্টোবর) নতুন করে আরও ৩৪টি মরদেহ উদ্ধারের পর দেশটির কর্তৃপক্ষ প্রাণহানির এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।নেপালি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা দিল কুমার তামাং বলেছেন, ভারত সীমান্ত লাগোয়া পূর্ব নেপালের পঞ্চথার জেলায় ২৪ জন এবং পার্শ্ববর্তী ইলমে ১৩ জন, এছাড়া দোতি জেলায় ১২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আর বাকিদের মৃত্যু হয়েছে হিমালয়ের দেশ খ্যাত নেপালের পশ্চিমাঞ্চলীয় বিভিন্ন এলাকায়। এবারের বন্যা ও ভূমিধসে এখনো ২২ জন আহত এবং ২৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারের পক্ষ থেকে বন্যা এবং ভূমিধসে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে এক হাজার ৭০০ ডলার সহায়তা এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করা হবে।ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, টানা ভারি বর্ষণের ফলে দেশটির রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে প্রায় সাড়ে ৩০০ কিলোমিটার পশ্চিমের সেতি গ্রামে বন্যায় গত দুদিন যাবত আটকে পড়া ৬০ জনকে জীবিত উদ্ধারের প্রচেষ্টা ব্যাহত হয়েছে।দেশটির পুলিশের মুখপাত্র বসন্ত কুনওয়ার রয়টার্সকে বলেছেন, গতকাল থেকে অব্যাহত বৃষ্টিপাত এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকারীরা গ্রামটিতে পৌঁছাতে পারছেন না। কিন্তু তাদের উদ্ধারের চেষ্টা এখনো চলছে।স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা যায়, ধান এবং অন্যান্য ফসল পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়া দেশজুড়ে নদ-নদীর পানি বেড়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, সেতু ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এবং ভূমিধসও হয়েছে। বিরাটনগর শহরের একটি বিমানবন্দরের রানওয়ে পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রত্যেক বছর বর্ষা মৌসুমে নেপালে আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। সাধারণত বছরের জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ শুরু হয়। যদিও চলতি বছরের অক্টোবর মাসে দেশটিতে বৈরী আবহাওয়া দেখা দিয়েছে।নেপালের আবহাওয়া বিভাগ আগামী দুই দিনে দেশের কিছু কিছু স্থানে ভারি বৃষ্টি এবং পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি তুষারপাতের পূর্বাভাষ দিয়েছে। বর্ষণ-বন্যায় দুর্যোগ প্রবণ নেপালে প্রত্যেক বছর শত শত মানুষের প্রাণহানি ও হাজার হাজার নেপালি রুপির ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে।এ দিকে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, গেল কয়েকদিনের বর্ষণ, আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১১ জন। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয় বলেছেন, তার রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৩৯ জন মারা গেছেন।সূত্র : এএফপি, রয়টার্স