পরিকল্পনামন্ত্রীর উদ্যোগে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ অনেক এমপি-মন্ত্রী আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন সেতু নির্মাণ করে দিবেন। কিন্তু সবাই কথাতেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। কেউ সেতু বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে পারেন নি। স্বাধীনতার পর থেকেই সেতু থেকে বঞ্চিত ছিলাম আমরা। শেষমেষ পরিকল্পনামন্ত্রী আমাদের স্বপ্ন পূরণ করলেন। আমাদের মুক্তি দিলেন শত বছরের দুর্ভোগ থেকে। ভেবেছিলাম মৃত্যুর আগে হয়ত সেতু দেখতে পারব না। কিন্তু মন্ত্রী মহোদয় আশা পুরালেন। উনার উন্নয়নে কল্পনার কাছেও হার মানলাম। কথাগুলো বলছিলেন কান্দিগাঁও গ্রামের ষাটোর্ধ মখলিছ মিয়া।মখলিছ মিয়ার মতো আরেক বৃদ্ধা বলেন, সেতুর কাজ শেষ দেখে মনটা ভরে গেছে। এটা সেতু নয় আমাদের জন্য স্বর্গস্বরূপ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আর নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হবে না। এখন আমাদের শত বছরের দুর্ভোগ লাগব হবে। শান্তিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের পাথারিয়া সেতুটির জন্য হাহাকার ছিল মানুষের। স্বাধীনতার পর থেকেই অনেকে আশ্বাস দিয়েছিলেন সেতু করে দিবেন। কিন্তু কেউ বাস্তবায়ন করতে পারেননি। এই সেতুটির জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছিল ২৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী আলহাজ্জ্ব এমএ মান্নান এমপি। মন্ত্রীর একান্ত প্রচেষ্টায় বহুল প্রত্যাশিত পাথারিয়া ইউনিয়নের পূর্ব-পশ্চিমের মিলনস্থল ‘পাথারিয়া সেতু’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরপরই দ্রুততম সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু আনুসাঙ্গিক কিছু কাজ বাকি। এরপরই এলাকাবাসীর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়ায় আশার আলো দেখছেন এই অঞ্চলের মানুষ।সেতুটি চালু হয়ে গেলেই পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের প্রায় ২০ কিঃ মিঃ রাস্তা কমবে উপজেলা সদরে আসার ক্ষেত্রে, তেমনিভাবে পূর্বাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থাও হবে সহজ। তাদেরকে আর কষ্ট করে নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হবে না। শুধু পাথারিয়া, কান্দিগাঁওই নয় সেতুটি নির্মাণের ফলে আসামমুড়া, কাশিপুর, নারাইনকুরি, পুরান কান্দিগাঁও, শ্যামনগরসহ ২৫টি গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থাও হবে সহজতর। শিক্ষা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও আসবে আমূল পরিবর্তন। এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষদের কথা চিন্তা করেই সেতু স্থাপনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন মন্ত্রী এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেতুর বাস্তবায়নও হয়েছে। সেতুর কাজ শেষ হওয়ায় পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক।

উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, পাথারিয়া এলাকার কালনী নদীর উপর নির্মানাধীন এই সেতুটিতে চুক্তিমূল্য অনুযায়ী ব্যয় হবে প্রায় ১৯ কোটি ৭ লক্ষ ৯২ হাজার ৮ শত টাকা। সেতু নির্মানের কাজ করছে রানা বিল্ডার্স (প্রাইভেট) লিমিটেড -বাসেত প্রকৌশলী(জেবি)।পাথারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নের মানুষের বহুল প্রত্যাশিত সেতুর কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। পরিকল্পনামন্ত্রীর জন্যই আমরা শত বছরের কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছি। তিনি আমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা বাস্তবায়ন করেছেন। সেতুটি আমাদের জন্য উন্নয়নের স্বর্গস্বরূপ। শান্তিগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত প্রচেষ্টায় পাথারিয়া সেতুর কাজ এখন শেষের দিকে। সেতুটির উদ্বোধন হয়ে গেলেই শত বছরের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে এ অঞ্চলের মানুষ।এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আল নূর তারেক বলেন, ব্রিজের কাজ শেষ। এপ্রোচসহ কিছু আনুসাঙ্গিক কাজ বাকি আছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই সকল কাজ শেষ করে সেতুর দ্বার উন্মোচনের ব্যবস্থা করা হবে।

You might also like