বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নামের আগে সেনা পদবি নয়, দাবি সংসদে

নিউজডেস্ক
সত্যবাণী

জাতীয় সংসদভবন থেকেঃ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে কিন্তু নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করতে হবে। মাস্টার মাইন্ডদের খুঁজে বের করতে কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন খসরু বলেন, খুনিদের নামের আগে কর্নেল, ক্যাপ্টেন এগুলো ব্যবহার করা উচিত না।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে মানুষ কতো নিকৃষ্ট হতে পারে, যিনি আমাদের স্বাধীনতা দিলেন, সার্বভৌমত্ব দিলেন তাকে নির্মমভাবে সপরিবারে খুন করা হল। খুন করে আইন করা হল যে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করা যাবে না, এটাকে বলে দায়মুক্ত অধ্যাদেশ। মাননীয় স্পিকার পৃথিবীতে এমন আইন আছে? খুন করবে তার বিচার করা যাবে না। তারা আততায়ী না, তারা খুন করার আগে মোস্তাক এবং জিয়ার কাছে গিয়েছিল। জিয়া বলেছে আমরা সিনিয়র অফিসার পারলে তোমরা কর। তখন জিয়ার দায়িত্ব ছিল, মোস্তাকের দায়িত্ব ছিল আর্মির জেলে সোপর্দ করা। তা না করে তাদের রাষ্ট্রদূত বানিয়ে দিয়েছে। এটা হয়?এই সেদিন, বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে, আর ওখানে বিরোধী দলের নেতার চেয়ারে বসিয়ে দিয়েছে কর্নেল রশিদকে। সে (খালেদা জিয়া) জানে না? বেগম জিয়া জানে না, রশিদ খুনি। নিষ্পাপ রাসেলকে খুন করেছে, বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছে, বঙ্গমাতাকে খুন করেছে, তাকে বিরোধী দলের নেতার চেয়ারে বসিয়ে দিল বেগম জিয়া। জিয়াউর রহমান ও মোস্তাকের মতো খালেদা জিয়াও অপরাধী। তারা কালচার চালু করেছিল, কালচার অব ইমপিওরিটি। খুন করলে তাকে প্রধানমন্ত্রী বানায়া দাও রাষ্ট্রদূত বানিয়ে দাও।

তিনি বলেন, এতকিছুর পরেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোকোর মৃত্যুতে তার বাড়িতে গিয়েছিল, বাড়িতে ঢুকতে দেয় নাই জাতির জনকের কন্যাকে। এটা হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু শেখ হাসিনা না, তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা তিনি গিয়েছেন বেগম জিয়ার বাড়িতে বসতে দিল না! ওদের মনে থাকা উচিত, জিয়া এবং জিয়ার স্ত্রী বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে প্রায়ই যেত, বঙ্গবন্ধুর দিকে তাকাতে সাহস পেত না, সেই লোক আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ঢুকতে দেননি। তারা খুন করার পর ইনডেমনিটি করল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটা বাতিল করলাম। বাতিল করার পর বিচার করলাম মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হল কেউ পাকিস্তানে লিবিয়াতে কোথাও কোথাও লুকিয়ে আছে। তারা আর জীবনে আসতে পারবে না। জীবনে বাংলাদেশে বুক ফুলিয়ে হাটতে পারবে না, রেডিওতে শুনলাম বলতে আমি মেজর ডালিম বলছি। ওই কুলাঙ্গাররা কারো কারো মৃত্যু হয়েছে বাকিরা কখনো আসবে না। শুনলাম কর্নেল রশিদ নাকি আমেরিকায় চাকরি করে। কত বড় সাহস? এদের নামের আগে কর্নেল, ক্যাপ্টেন এগুলো ব্যবহার করা উচিত না। আমাদের সেনাবাহিনী আমাদের গৌরব। খুনিদের নামের আগে কর্নেল ব্রিগেডিয়ার থাকা উচিত না।তিনি নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করতে কমিশন গঠন করার দাবি জানিয়ে বলেন, কমিশন গঠন করা হোক। যারা নেপথ্য নায়ক, যাদের মাস্টার মাইন্ড বলা হয়, ওদের চিহ্নিত করা হোক। খুন করার আগে ফারুক তো নিয়মিত তাদের কাছে গিয়েছে, কারা তাদের দূতাবাসে চাকরি দিল, তাদের চিহ্নিত করতে চাই, চিনতে চাই। তাদের চিহ্নিত করে বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত।

আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, দুর্নীতি ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ। তিনি চেয়েছিলেন গণতন্ত্র ও আইনের শাসন। তিনি সময় পাননি। কিছু বিপদগামী মানুষ, যারা বাংলাদেশকে অকার্যকর করতে চেয়েছিল, স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করতে চেয়েছিল তারা বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় বঙ্গবন্ধুকে। তারা হত্যা করে কিন্তু মৃত্যুতে বঙ্গবন্ধু অনেক শক্তিশালী। তিনি বাঙালি জাতির এগিয়ে চলার প্রেরণা। আমাদের দায়িত্ব তার সোনার বাংলা তৈরি করা।এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম,শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি, মৃণাল কান্তি দাস, আব্দুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।

You might also like