বিএনপির ২ শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ সিলেট জেলা ও নগর আ’লীগের প্রতিনিধি সভা উপলক্ষে নির্মিত তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন ভাঙচুরের ঘটনায় এবার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে আ’লীগের পক্ষ থেকে নগরির কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করা হয়। নগর আ’লীগ সদস্য জাহিদ সারওয়ার এ মামলা করেন। এতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করেন।মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে বুধবার দুপুরে নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ। তিনি জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাবে।
জেলা বিএনপি’র সাবেক স্বাস্থ্য সম্পাদক আফম কামাল গত রোববার রাত সোয়া আটটায় নগরির আম্বরখানা এলাকায় খুন হন। এরপর বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এ খুনের পেছনে সরকার দলীয় সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়িত। ওই রাতেই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের একটি বিক্ষোভ মিছিল থেকে জেলা ও নগর আ’লীগের প্রতিনিধি সভা উপলক্ষে নির্মিত তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে।জানা যায়, সিলেটে বিএনপিকে ‘সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার’ আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জেলা ও নগর আ’লীগ। দলটি সঠিকভাবে পরিচালিত না হলে ১৯ নভেম্বর সিলেটের গণসমাবেশসহ সব ধরনের কর্মসূচি আ’লীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিহত করতে বাধ্য হবেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।মঙ্গলবার রাত সোয়া ১১টার দিকে গণমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠানো হয়। এরআগে নগরির চৌহাট্টা এলাকায় জেলা ও নগর আ’লীগ রাত ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত জরুরি সভা করে। এ ছাড়া গতকাল আ’লীগের সভা থেকে‘বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের’ বিরুদ্ধে গত রোববার রাতে নগরির রিকাবীবাজার এলাকায় আ’লীগের প্রতিনিধি সভা উপলক্ষে নির্মিত বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন ভাঙচুরের অভিযোগ করা হয়। আ’লীগের ওই সভায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাতে আ’লীগ সভা করেছে। সে সভা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করার পাশাপাশি গণমাধ্যমে একটা বিবৃতি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। পরে রাত সোয়া ১১টার দিকে জেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান এবং নগর আ’লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মো.জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এ বিবৃতি পাঠানো হয়।
বিএনপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আ’লীগের প্রতিনিধি সভাকে ভন্ডুল করার জন্য সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। এতে দাবি করা হয়, নিজেদের দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও ব্যবসায়িক দ্বন্ধের কারণে মারা যান আফম কামাল। কিন্তু তারা দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও ব্যবসায়িক দ্বন্ধকে রাজনৈতিক দ্বন্ধে পরিণত করার পাঁয়তারা করছে। এটাই বিএনপি’র চরিত্র। তারা নিজেদের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপাতে সব সময়ই সিদ্ধহস্ত। কিন্তু জেলা ও নগর আ’লীগ কোনোভাবেই তা হতে দেবে না।বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঘটনার পরপরই সিলেট জেলা ও নগর আ’লীগের নেতারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁরা বিএনপি’র সন্ত্রাসীদের এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁরা গণমাধ্যমে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের আবেগের জায়গা। বিএনপি সন্ত্রাসীরা আমাদের সেই আবেগের জায়গায় আঘাত করেছে, যা কোনোভাবেই আ’লীগের নেতা-কর্মীরা মেনে নিতে পারে না। শান্তি ও সম্প্রীতির সিলেট নগরকে অশান্ত করার জন্য বিএনপি’র সন্ত্রাসীরা পাঁয়তারা করছে। এসব সন্ত্রাসী কর্মকা-ে লিপ্ত দুষ্কৃতকারীদের সিলেটের মাটিতে স্থান দেয়া হতে পারে না।’ নেতারা বিএনপি ‘সন্ত্রাসীদের’ অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।এ ছাড়া আ’লীগ নেতারা বিবৃতিতে বিএনপি নেতা কামালের হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।