বিএনপির ৭ সদস্য পদত্যাগ করলে সরকার পতন হয় না : ওবায়দুল কাদের 

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির ৭জন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করলে সরকার পতন হয় না। ৩৫০ জন সদস্য নিয়ে সরকার গঠিত হয়েছে। জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারা আছে।
তিনি বলেন, বিএনপি এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মরে ভূত হয়ে গেছে। সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আইন বাতিল করা হয়েছে। পাকিস্তান ছাড়া বিশ্বের কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই।সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেতু মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।ওবায়দুল কাদের বলেন, ১০ ডিসেম্বরের (বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হয়েছে) খেলায় আমরা জিতে গেছি। নির্বাচনেই ফাইনাল খেলা হবে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল আবারও সরকার গঠন করবে। আগামী নির্বাচন হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। দুর্নীতিবাজ তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে খেলা হবে। উদ্বোধনী বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, বিএনপির আমলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে। যারা যুদ্ধ করেনি তারা খেতাব পেয়েছে। যারা কোনদিন যুদ্ধের মাঠে ছিল না, তারা খেতাব পেয়েছে, তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে জিয়াউর রহমান। বিএনপি-জামায়াতকে যে চেনে না, সে কবরস্থানও চিনে না।

প্রধান বক্তা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেন, ভাবখানা এমন ছিল যেন ১০ তারিখে আকাশ মাথায় ভেঙে পড়ছে। ১০ তারিখের সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি প্রমাণ করেছে বিএনপি একটা মিথ্যাচারের দল, ভাওতাবাজির দল। তারা দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা আর মিথ্যাচার করে নিজেদের কর্মীদের সঙ্গেও মিথ্যাচার করে। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দলটা তৈরী করেছিল ক্যান্টনমেন্টে বসে অবৈধ ক্ষমতা দখল করে অবৈধ পন্থায়। যে দলের সৃষ্টিটাই অবৈধ, সেই দলের কর্মকান্ড কখনো জনগণের জন্য কল্যাণকর হতে পারেনা।
বিএনপির জনসভা নিয়ে টিভি চ্যানেলগুলোর ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘আমাদের চেহারা উনাদের পর্দায় দেখা যায় না। তাই তারা বারবার প্রচার করেছেন ১০ ডিসেম্বরের পর নাকি দেশ অচল হয়ে যাবে। টেলিভিশন খুললেই শুধু বিএনপির নয়াপল্টনের জনসভা। মনে হচ্ছিল টিভি চ্যানেলগুলো বিএনপির প্রচারণার এজেন্ট হিসেবে, প্রচারণা সেলের মেম্বার হিসেবে কাজ করেছে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, আওয়ামীলীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে বিএনপি আন্দোলনের নামে যা করছে, তা ‘ফুঁ’ বলে মন্তব্য করেছেন সম্মেলনের বিশেষ অতিথি ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জান চৌধুরী জাবেদ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো বৃহৎ শক্তিকে এই ফুঁ দিয়ে নাড়ানো যাবে না। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে অনেক ভাওতাবাজি করেছে বিএনপি। তারেক রহমান আসবেন। সে জনসভার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পদত্যাগ করাবেন। উল্টো তারা ৭ জন পদত্যাগ করেছেন। সাড়ে তিনশ’ এমপির মধ্যে ৭ জনের পদত্যাগ মাত্র। সময় এসেছে, সামনে জাতীয় নির্বাচন। বিএনপি স্বাধীনতার শক্তিকে পরাজিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ বিরোধী চক্রকে যে-কোনো কিছুর বিনিময়ে প্রতিহত করবো।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, নানান জায়গায় ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তারা ভার্চুয়াল মিডিয়ায় অপপ্রচার চালাচ্ছে, জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। আমাদের বিপুল পরিমাণ সমর্থক রয়েছে তা প্রচার করতে হবে, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করতে হবে। সকল মিথ্যাচারের কড়া জবাব দিতে হবে। তা না হলে ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জোর গতি পাবে।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, ড. আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম প্রমুখ। এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে মোসলেম উদ্দিন আহমদ এমপি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মফিজুর রহমান পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন।সোমবার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ তাদের নাম ঘোষণা করেন।

You might also like