বিয়ানীবাজারে শব্দ দুষণ রোধে মেয়রের উদ্যোগ

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌর শহরে শব্দ দূষণ নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। শ্রবণশক্তির ধারণ ক্ষমতা থেকে বেশি শব্দ সন্ত্রাসের কারণে প্রবাসী অধ্যুষিত এই উপজেলার মানুষ অনেকটাই অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। তবে এবার নতুন নির্বাচিত মেয়র ফারুকুল হকের শব্দ দূষণ রোধে গৃহীত সিদ্ধান্ত ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে।নতুন মেয়র দায়িত্ব নেয়ার মাসখানেকের মাথায় এমন কার্যকরী সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সব মহল। দূষণ বেড়ে যাওয়ায় শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা অনুসরণ করে অনুমতি ছাড়া উচ্চস্বরে যত্রতত্র মাইক/সাউন্ড সিস্টেম বাজানো বন্ধে উদ্যোগ নিচ্ছে বর্তমান পরিষদ।
জানা গেছে, শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ যথাযথভাবে প্রতিপালন করে ব্যবসায়ীদেরকে পৌরসভার আওতাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে এবং বিধিমালা অনুসারে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুমোদন ব্যতিত মাইক/সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া প্রদান ও ব্যবসা পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে হবে। একইসাথে মাইক/সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহারকারীদেরকেও একইভাবে অনুমতি গ্রহণ সাপেক্ষে মাইকিং প্রচারণা চালাতে হবে। তবে সরকারি প্রজ্ঞাপন, ধর্মীয় কিংবা শোকের প্রচারণা ব্যতিত অন্য প্রচারনার ক্ষেত্রে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অনুমতির সাথে সাথে ফি’ও পরিশোধ করতে হবে।

শব্দ দূষণ রোধে মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পৌর মেয়র ফারুকুল হক।তিনি বলেন, বিধিমালা অনুযায়ী আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকায় সময়সূচি নির্ধারণের পাশাপাশি শব্দ ব্যবহারের মাত্রা বেঁধে দেয়া হবে। খেলাধুলা, কনসার্ট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক বা অন্য কোন ধরনের সভা, মেলা, বিজ্ঞাপন, যাত্রাগান ইত্যাদির ক্ষেত্রে শব্দের মাত্রা অতিক্রম করে-এমন যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। তবে তার জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।মেয়র বলেন, নাগরিক জীবনে স্বাস্থ্যঝুঁকির একটি অন্যতম কারণ শব্দ দূষণ। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, গান-বাজনার কনসার্ট, বিজ্ঞাপন ও ব্যবসায়িক প্রচারণা, নির্মাণকাজ, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে এ সমস্যা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে একদিকে জনগণ যেমন শ্রবণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার ঝুঁকিতে রয়েছে, সেই সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শব্দ দূষণ দুশ্চিন্তা, অবসাদ, উদ্বিগ্নতা, নিদ্রাহীনতা ইত্যাদি বাড়িয়ে দেয়, যা দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ এ আবাসিক, নীরব, মিশ্র, শিল্প ও বাণিজ্যিক মোট পাঁচ ধরনের এলাকা এবং সেখানে শব্দের মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া থাকলেও বাস্তবে সব স্থানেই শব্দের মাত্রা অতিরিক্ত।তিনি আরও বলেন, আমি ও আমার কাউন্সিলরদের পর্যবেক্ষণ এবং পৌরসভার সচেতন নাগরিক সমাজের বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে পৌরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে আমাদের পরিষদের সবধরণের প্রস্তুতি প্রায় শেষপর্যায়ে। দিন দু’য়েকের মধ্যে বিষয়টি পৌরবাসীকে জানিয়ে দেয়া হবে। সরকারি প্রজ্ঞাপন, ধর্মীয় কিংবা শোকের প্রচারণা ব্যতিত অন্য প্রচারণার ক্ষেত্রে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অনুমতির সাথে ফি’ও পরিশোধ করতে হবে।

You might also like