বীর মুক্তিযোদ্ধা রুমা চক্রবর্তী পেলেন সিলেটে আ’লীগের মনোনয়ন
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণীঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে দল মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে আ’লীগ। ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকেলে গণভবনে সংরক্ষিত নারী আসনের আ’লীগের ৪৮ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে সিলেট থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুমা রায় চৌধুরী (রুমা চক্রবর্তী)।
এরআগে দুপুরে আ’লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে আ’লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সংরক্ষিত মহিলা আসনে দলের মনোনীত প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংরক্ষিত আসনে মনোনয়নপত্র বিক্রি করে আ’লীগ। ৩ দিনে মোট ১,৫৪৯ ফরম বিক্রি করেছে দলটি। এতে দলটির আয় হয়েছে ৭ কোটি ৭৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
মূলত জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৫০টি। একেকটি রাজনৈতিক দল ৬টি সাধারণ আসনের বিপরীতে একটি করে সংরক্ষিত নারী আসন পায়। এ হিসেবে নিজেদের এবং স্বতন্ত্রদের সমর্থন পাওয়ায় আ’লীগ পাবে মোট ৪৮ আসন।
উল্লেখ্য, রুমা রায় চৌধুরী (রুমা চক্রবর্তী) সিলেট জেলার বিশ্বনাথ থানার কালিগঞ্জের মৌজপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা রবীন্দ্র রায় চৌধুরী ও মাতা সরুজু বালা রায় চৌধুরীর ৫ কন্যার মধ্যে চতুর্থ। বাবা রবীন্দ্র রায় চৌধুরী সিলেট পৌরসভায় ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত (আমৃত্যু) এমবি. ডাক্তার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অবিভক্ত ভারতে কাকা গিরিন্দ্র রায় চৌধুরী নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসুর ফরওয়ার্ড ব্লকে যোগদান করেন। গোপন বিপ্লবী আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি নিখোঁজ হন।
রুমা চক্রবর্তী একাত্তরে স্কুল ছাত্রী ছিলেন। দেশের টানে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এছাড়া আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য আগে থেকেই নিজেকে তৈরি করেন এই সাহসী নারী।
বিয়ের পর থেকে তিনি রুমা চক্রবর্তী হিসেবে পরিচিতি পান৷মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন রুমা রায়৷ তিনি ঢাকায় বড় বোনের বাসায় থেকে পড়াশোনা করার কারণে তৎকালীন আন্দোলন-সংগ্রামের সাথে জড়িয়ে পড়েন।
রুমা মিরপুর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার প্রশিক্ষণ নেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে ঢাকা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়েও নার্সিং প্রশিক্ষণ নিয়ে সহকারী সেবিকা হিসেবে কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে এবং বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কাঠের বন্দুক নিয়ে প্রশিক্ষণ নেন কিশোরী রুমা রায়।