বীরকন্যা বেগম মুশতারী শফী চট্টগ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
চট্টগ্রাম: স্বাধীনতা সংগ্রামের বীরকন্যা বেগম মুশতারী শফী আজ বিকেলে নগরীর চৈতন্যগলি কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন।এর আগে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানো শেষে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে বাদ যোহর তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এএসএম জামশেদ খোন্দকারের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা বেগম মুশতারী শফীকে রাষ্ট্রীয় সম্মান গার্ড অব অনার দেয় পুলিশের একটি চৌকস দল। এ সময় তার কফিন জাতীয় পতাকায় মুড়িয়ে দেওয়া হয়।আজ বুধবার সকাল ৯ টায় নগরীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে বেগম মুশতারী শফীর মরদেহ শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কিছু সময় রাখা হয়। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ছাত্র-যুব সংগঠনের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিগন তার কফিনে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বেগম মুশতারী শফীকে বহনকারী গাড়ি আবারও নগরীর এনায়েতবাজারে মুশতারী লজে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখান থেকে দুপুর পৌনে ১টায় মরদেহ নেওয়া হয় জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা চলাকালে বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরিন আক্তার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেণু কুমার দে, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, প্রয়াতের জামাতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান সাংসদ অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নজরুল ইসলাম হিরু, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ, চট্টগ্রাম বীর মুক্তিযোদ্ধা বালাগাত উল্লাহ, সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা, উদীচী চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি ডা. চন্দন দাশ, বেগম মুশতারী শফীর সন্তান মেহরাজ তাহসান শফী, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির চট্টগ্রাম সভাপতি দেলোয়ার মজুমদার, কবি সাংবাদিক ওমর কায়সার ও কামরুল হাসান বাদল, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু প্রমুখ।
বেগম মুশতারী শফীর মেয়ে রুমানা শফী একটি শপথবাক্য পাঠ করে শুনান। তিনি জানান, জীবদ্দশায় তার মায়ের রেখে যাওয়া শপথবাক্যটি তিনি পেয়েছেন। এতে বলা হয়, ‘যারা ১৯৭১-এ নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে এবং নৃশংসভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে, সে খুনিদের সাথে কোনো আপস হতে পারে না। অতীতের সব ত্রুটি বিচ্যুতি ঝেড়ে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দেশে প্রতিষ্ঠিত হোক।সেই শপথবাক্যে কণ্ঠ মেলান উপস্থিত শত শত মানুষ।শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। খেলাঘরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজা খানম, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ড. অনুপম সেন, খেলাঘরের সভাপতি পান্না কায়সারের পাঠানো শোক বিবৃতি পাঠ করা হয়।সাংগঠনিকভাবে চট্টগ্রাম মহানগর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর, সিপিবি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাম গণতান্ত্রিক জোট, গণজাগরণ মঞ্চ, উদীচী চট্টগ্রাম, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, প্রমা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, প্রজন্ম ৭১, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, নারী যোগাযোগ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।