বেকার ২৫ হাজার শ্রমিক সুনামগঞ্জ সীমান্তে ৮ মাস থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে আটমাস ধরে বন্ধ আছে ভারত থেকে কয়লা আমদানি। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন সুনামগঞ্জের ৪ শতাধিক আমদানিকারক। কোটি টাকার এলসি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। অন্যদিকে আমদানি বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন ৩ শুল্ক স্টেশনের ২৫ হাজার শ্রমিকও।সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়ছড়া, বাগলী ও চারাগাঁও সীমান্ত দিয়ে নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ভারত থেকে সুনামগঞ্জে কয়লা আমদানি হচ্ছে। ২০১৪ সালে ভারতের মেঘালয়ের একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশগত ক্ষতির কথা বিবেচনা করে কয়লা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশটির ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। পরে একটানা প্রায় ৭ মাস বন্ধ থাকে কয়লা আমদানি। এরপর ফের আমদানি চালু হলেও তা আর নিয়মিত হয়নি। বছরে ৩/৪ মাস চলে আমদানি কার্যক্রম আর ৮/৯ মাস বন্ধ থাকে। এতে লোকসানে পড়েছেন কয়লা আমদানিকারকরা।

এদিকে, চলতি বছরেও মার্চ থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। ৮ মাসেও কয়লা আমদানি শুরু না হওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন ৩ শুল্ক স্টেশনের ২৫ হাজার শ্রমিক। ফলে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অনেক শ্রমিক কাজের সন্ধানে ছাড়ছেন নিজ গ্রাম। আবার অনেক শ্রমিক কয়লা আমদানি শুরু হবে সেই আশায় সীমান্ত এলাকার সামনে বসে বসে দিন পার করছেন।শ্রমিক রবিউল, পাবেল, মিলন মিয়া বলেন, ‘সীমান্ত এলাকা দিয়ে কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছি। ঘরে চাল-ডাল কিছু নেই। ছেলে মেয়ে সবাই না খেয়ে আছে।ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন, এমরুল হাসান, এম এ হালিম বলেন, ‘কোটি টাকার ওপরে এলসি নিয়ে বিপাকে পড়েছি আমরা। ব্যাংক ঋণ, ধার-দেনা করে এলসি খুলে কয়লা আমদানি করতে না পারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। অনেকেই আবার লোকসানে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন।আমদানিকারকদের দাবি, ৩টি শুল্ক স্টেশন থেকে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করছে। কিন্তু ভারত থেকে ঠিকমত কয়লা আমদানি করতে পারছেন না তারা। ৩/৪ মাস খোলা থাকলে ৮/৯ মাস বন্ধ থাকে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। সারা বছর কয়লা আমদানির দাবি জানিয়েছেন তারা।কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে সুনামগঞ্জের ৩ টি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশে কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু ভারতের সমস্যার কারণে কয়লা আমদানি বন্ধ থাকে। এতে যেমন আমরা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হই, তেমনি সরকারও রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। আমাদের দাবি সরকার যেন এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।তিনি আরও বলেন, ৩ টি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে ২৫ হাজার শ্রমিক মানবেতর জীবন যাপন করেছে। তাদের প্রত্যাশা সরকারের বিশেষ উদ্যোগে আবারও সুনামগঞ্জের ৩ টি শুল্কস্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি শুরু হবে।

You might also like