ভাষাসৈনিক চৌধুরী আব্দুল হাই কে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের বিশেষ সম্মাননা প্রদান

ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী
সত্যবাণী

হবিগঞ্জ: মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হবিগঞ্জ জেলার বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক অ্যাডভোকেট চৌধুরী আব্দুল হাইকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষে জনাব চৌধুরীর বাসভবনে গিয়ে এ সম্মাননা প্রদান করেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মর্জিনা আক্তার।

উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট চৌধুরী আব্দুল হাই একজন ত্যাগী ভাষাসংগ্রামী। যাঁদের যুগান্তকারী ভূমিকায় ভাষা আন্দোলনে হবিগঞ্জের ছাত্ররা সোচ্চার হয়ে উঠেছিল তিনি ছিলেন তাঁদের অন্যতম। তৎকালীন হবিগঞ্জ মহকুমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্ররা বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এ সময় তিনি ছাত্রদের মধ্যে প্রিয়মুখ হয়ে ওঠেন। ভাষাসংগ্রামী চৌধুরী আব্দুল হাই এঁর মতো হবিগঞ্জের অন্যান্য ভাষাসংগ্রামীরাও প্রতিবাদী সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে আন্দোলনে শরিক হন। সবার সার্বিক সহযোগিতায় হবিগঞ্জের ছাত্র-জনতা মিলে যখন আন্দোলনে ব্যস্ত, ঠিক সে মুহূর্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ভাষাসংগ্রামী মো. আবিদ আলী হবিগঞ্জে আসেন। তিনি ভাষাসংগ্রামী চৌধুরী আব্দুল হাইকে সঙ্গে নিয়ে কোর্টস্টেশন রোড এলাকায় প্রথম সভা আহ্বান করেন। এ সভায় হবিগঞ্জের ভাষাসংগ্রামী ও ছাত্ররা অংশগ্রহণ করেন। এ সভার পর ছাত্ররা আরো গতিশীল হয়ে ওঠেন। এ সময় ভাষাসংগ্রামী চৌধুরী আব্দুল হাই হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ক্যাপ্টেন। মূলতঃ এজন্যই ভাষা আন্দোলন সংক্রান্ত ছাত্রদের জাগ্রত করে তোলার দায়িত্বটাও তাঁর কাঁধে এসে পড়ে। দেশ-মাটি-মানুষের ভালবাসায় আসক্ত হয়ে তিনি খাওয়া-ঘুম হারাম করে রাজপথে নেমে পড়েন। ছাত্ররাও তাকে অনুসরণ করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি ভাবলেন শুধু হবিগঞ্জে বসে থাকলে হবে না। যেতে হবে ঢাকায়। প্রয়োজনে প্রাণ যাবে। তাই ভয়কে দূর করে তিনি চলে গেলেন ঢাকায়। সেখানে গিয়ে দেখা করেন ভাষাসংগ্রামী জাতীয় সংগঠকদের সাথে। সেখানে তাদের সঙ্গে তিনিও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ সংবাদ শুনে হবিগঞ্জের ছাত্ররা উৎসাহ পেয়ে আন্দোলনে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠেন।

 

You might also like