ভোটের আগে সংলাপ চান ড. কামাল
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ সরকারকে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের জন্য পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গণফোরামের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় আসুন ঐক্যবদ্ধ হই’ শীর্ষক সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান।সভায় প্রধান অতিথর বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘দেশ ও দেশের জনগণকে রক্ষায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী গণতন্ত্রকামী দল ও শক্তির সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার স্বার্থে অবিলম্বে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।আজ আমার একটাই আবেদন, জাতীয় ঐক্যের জন্য আমরা সবাই যেন কাজ করি। আর ঐক্যবদ্ধ হয়েই আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারব।’
ড. কামাল বলেন, ‘সংবিধানে বলা আছে- রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। জনগণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তার ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরকার গঠন করতে চায়। অথচ এই স্বাধীন রাষ্ট্রে জনগণের মৌলিক ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আজ সংগ্রাম করতে হচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।‘জাতির জন্য আজ সবচেয়ে বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে গণতন্ত্রহীনতা। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর মানুষ আশায় বুক বাঁধে। কিন্তু এবারও হতাশ হতে হয়। প্রায় ১৫ বছরে দেশবাসী ক্রমহ্রাসমান গণতন্ত্র প্রত্যক্ষ করছে। ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন হয়েছে। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জাতি চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে আছে।’সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, ‘বাংলাদেশে যা চলছে এটা কোনো রাজনীতি না। এটা রাজনীতির নামে প্রহসন। বর্তমান সরকারের আতঙ্ক হচ্ছে ড. ইউনূস এবং ড. কামাল হোসেন৷ তাই এই সরকার তাদের দেখতে পারে না। যেখানে পুরো পৃথিবীর মানুষ তাদের নিয়ে গর্ব করে সেখানে আমাদের দেশে এই গুণীজনদের হেনস্থা করার জন্য সরকার সব চেষ্টাই করছে।’
৬ দফা নীতি ও কর্মসূচি
সভায় গণফোরামের পক্ষ থেকে ৬ দফা নীতি ও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তা হল- একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন করা, গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুর্ণগঠন করা, নির্বাচন সামনে রেখে বাকস্বাধীনতা, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে বাধা না দেয়া, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে নির্বাচনকালীন সরকার বাধ্য রাখা, বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা এবং নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. মাহফুজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান জাহাঙ্গীর, যুব ফোরামের নেতা সাইফুল ইসলাম সজল প্রমুখ।