মানববন্ধনে দাবিঃ ৭২ ঘন্টার মধ্যে আবুল হাসান হত্যাকারীদের গ্রেফতার চাই
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ নৃশংস সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সিলেট মহানগর ছাত্রলীগ কর্মী, নগরির ২৫নং ওয়ার্ডের মোমিনখলা মহল্লার বাসিন্দা, তরুণ সমাজকর্মী আবুল হাসান হত্যাকারীদের আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
২৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বেলা ২টায় নগরির হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী চত্বরে ২৫নং ওয়ার্ডবাসীর ব্যানারে ছাত্রলীগ কর্মী আবুল হাসান হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এ দাবি জানান। সাবেক সিটি কাউন্সিলর মোঃ আশিক আহমদের সভাপতিত্বে এবং তরুণ সমাজকর্মী রাজন আহমদের পরিচালনায় কান্নাজড়িত কন্ঠে বক্তব্য রাখেন নিহত আবুল হাসানের দূর্ভাগা পিতা আব্দুল আউয়াল। এতে আরো বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি আনছার আহমদ কয়েস, মোমিনখলা জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বুরহান উদ্দিন, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম তুষার, স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে সাদেক উদ্দিন, সুরমান মিয়া, গিয়াস উদ্দিন, সাবেক কৃতী ফুটবলার কামরুল হাসান, ছয়ফুর রহমান, মামুন আহমদ, আজহার আহমদ সিজিল, রুমন আহমদ, জুবায়ের আহমদ জিদান, সন্ত্রাসী হামলায় আহত জাবের আহমদ, মহররম আহমদ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি আবু দারদা তামী এবং আবু দাউদ জামীর সাথে আবুল হাসানের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে ওইদিন সন্ধ্যায় বিষয়টি নিস্পত্তির কথা বলে বাইপাস সড়কের একটি দোকানে আবুল হাসানকে নিয়ে যাওয়া হয়। আবুল হাসান সহকর্মী জাবের ও সায়েককে সাথে করে ঘটনাস্থলে গেলে আলাপের একপর্যায়ে তামী ও জামীর নেতৃত্বে কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর আকস্মিক হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত জখমী হয়ে আবুল হাসান, জাবের আহমদ ও সায়েক আহমদ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। শোর-চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসায় জাবের ও সায়েক কিছুটা সুস্থ হলেও গত ২ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবুল হাসান মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আবুল হাসানের ভাই বাদী হয়ে একই ওয়ার্ডের জিহাদুর রহমান মিঠুর ছেলে আবু দারদা তামী, আবু দাউদ জামী, শফিক মিয়ার ছেলে ফাহিম, আশিকুর রহমান টিটুর ছেলে মাহদী, লিয়াকত আলীর ছেলে টিপুল, হামদু মিয়ার ছেলে ফাহমিদ, জাকির মিয়ার ছেলে সিয়াম, মরম আলীর ছেলে জামিলকে আসামী করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা (মামলা নং-২৯/২৪) দায়ের করেন। মামলা রেকর্ড হওয়ার পরে স্থানীয় আল-আমীন সামী, তায়েফ, আব্দুস শহীদসহ আরো কয়েকজনের নাম সংযুক্ত করা হয়। এরা প্রত্যেকেই এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত।
বক্তারা হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার ১ মাস এবং আবুল হাসান নিহত হওয়ার ২২ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ আজ পর্যন্ত কোন হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেনি। বরং নিহতের পরিবারবর্গকে আসামী গ্রেফতারে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে মর্মে আশ্বস্ত করে যাচ্ছে। অপরদিকে চিহ্নিত গডফাদারদের ছত্রচ্ছায়ায় মামলার আসামী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলা তুলে নেয়ার জন্য সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদাররা বিভিন্নভাবে হুমকী দিচ্ছে। এদের নানামুখী অপতৎপরতায় নিহত আবুল হাসানের পরিবারবর্গ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বক্তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকারী আসামীদের গ্রেফতার করা না হলে এলাকাবাসী বৃহত্তর পরিসরে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন।
উল্লেখ্য, এলাকাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত শুক্রবারের মানববন্ধনে স্বতস্ফূর্তভাবে বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ অংশ নেন।