মারিউপোলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলো রাশিয়া
আন্তজার্তিক ডেস্ক
সত্যবাণী
ইউক্রেন: ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। মূলত রুশ সামরিক বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ এই শহরটি থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্যই এই স্থানীয় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে মস্কো। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে তথ্যটি জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রিত বারদিয়ানস্ক বন্দর হয়ে মারিউপোল থেকে জাপোরিঝিয়া পর্যন্ত একটি মানবিক করিডোর খোলা হবে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা) থেকে এই মানবিক করিডোর উন্মুক্ত হবে।রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই মানবিক কাজটি সফল করার জন্য আমরা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) এবং রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির (আইসিআরসি) সরাসরি অংশগ্রহণে এটি চালানোর প্রস্তাব করছি।
এছাড়া বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টার (বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টার) আগেই যুদ্ধবিরতিকে ‘নিঃশর্তভাবে সম্মান’ করার বিষয়টি রুশ কর্তৃপক্ষ, ইউএনএইচসিআর, আইসিআরসিকে লিখিতভাবে জানাতেও কিয়েভের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।গত ২৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোররাতে ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়ান সেনাবাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।মূলত ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর কয়েকদিন পর থেকেই মারিউপোল শহরটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। যার ফলে শহরটিতে মানবিক সাহায্য বিতরণের অনুমতি দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় করিডোর তৈরির কাজও বাধাগ্রস্ত হয়েছে।ফলে বহু বেসামরিক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে শহর থেকে বের হতে পারেননি। অল্প কিছু বেসামরিক নাগরিক যারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন তারা মারিউপোলের ভয়ানক অবস্থার বর্ণনা দিয়ে জানিয়েছেন, খাবার সরবরাহ ফুরিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শহরটির পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া ফুরিয়ে আসছে চিকিৎসা সরঞ্জামও।
ফলে অবরোধ ও যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট মানবিক সংকট আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনকি শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষুধা ও রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়ছে।রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর একজন জেনারেলও এরই মধ্যে স্বীকার করেছেন যে, মারিউপোল শহরে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অবশ্য এর পেছনে নিজের (রুশ) বাহিনীর দায় রয়েছে বলে স্বীকার করেননি তিনি।উল্লেখ্য, প্রায় পাঁচ লাখ বাসিন্দার মারিউপোল শহরটি দখল করা রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটি আজভ সাগরে ইউক্রেনের কৌশলগত বন্দর এবং ডনবাস অঞ্চলে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোর কাছেই অবস্থিত।