যুক্তরাজ্যের দর্শকদের জন্য নতুন আশার আলো ‘নোনাজলের কাব্য’ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার ১৩ অক্টোবর
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডনঃ তরুন প্রতিভাবান নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নোনাজলের কাব্য’র (The Salt in Our Waters) আন্তর্জাতিক যাত্রা এগিয়ে চলেছে।বিশ্বের একের পর এক মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা করে নিচ্ছে এই ছবিটি।এরই মধ্যে ৬৪তম বিএফআই লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসব এবং ২৫তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছে ‘নোনাজলের কাব্য’।
লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটির প্রদর্শনের তারিখ ১৩-১৭ অক্টোবর ২০২০। যুক্তরাজ্যের যেকোন প্রান্তে বসবাসরত বাংলাদেশী দর্শকরা ছবিটি এবার দেখতে পারবেন ঘরে বসেই। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বিএফআই কর্তৃপক্ষ এবারের আসরটি হাইব্রিড ফরম্যাটে সাজিয়েছে। ডিজিটাল স্ট্রিমিং প্রযুক্তির কল্যাণে বিএফআই ওয়েবসাইট থেকে দেখা যাবে অধিকাংশ ছবি। ‘নোনাজলের কাব্য’ ছবিটি উৎসবের ‘জার্নি’ বিভাগে দেখানো হবে যেখানে আরো থাকছে এ বছরের সবচেয়ে আলোচিত ছবি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘নোমাডল্যান্ড’ যা ইতিমধ্যে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে ‘গোল্ডেন লায়ন’ পুরস্কার জিতেছে।
নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত বলেন, ‘এটি আমার প্রথম ছবি। চিত্রনাট্যের প্রথম খসড়া লিখেছি পাঁচ বছর আগে। পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক চরে ১৫-২০ ঘর জেলের বসবাস। সেই জেলেপাড়ায় হঠাৎ এক ভাস্করের আগমন এবং তাকে ঘিরে গ্রামবাসীর জল্পনা কল্পনা, ভালো লাগা এবং পরিশেষে সংঘাত – এই নিয়েই ‘নোনাজলের কাব্য’র গল্প। এর নির্মাণ কাজটি ভীষণ কঠিন ছিল, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও নানা বাঁধা এসেছে। করোনা মহামারী ও লকডাউন তার মাঝে অন্যতম। ২০২০-এর এই বৈরী পরিবেশে দু দুটো বিশ্বমানের চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান করে নিতে পারাতে আমার পুরো টীম খুবই আনন্দিত। আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও ফিল্মসংশ্লিষ্ট বিশ্বের সেরা মানুষগুলোর নজর থাকে এই উৎসবগুলোতে। সব মিলিয়ে আমি মনে করি এটি আমার মতো একজন তরুন নির্মাতার জন্য একটি বড় পাওয়া’। তিনি আরও জানান, ‘আশা করছি ২০২১ সালের শুরুর দিকেই বাংলাদেশের দর্শক দেখতে পাবে ছবিটি। তবে তার আগে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে হবে।’
বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের যৌথ প্রযোজনার ‘নোনাজলের কাব্য’র দৈর্ঘ্য ১০৬ মিনিট। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, তিতাস জিয়া, তাসনুভা তামান্না, অশোক ব্যাপারী, আমিনুর রহমান মুকুলসহ অনেকে। ছবিটির আবহ সংগীত করেছেন অর্ণব। সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন লসঅ্যাঞ্জেলসে বসবাসরত থাই শিল্পী চানানুন চতরুংগ্রোজ যিনি এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের স্পিরিট অ্যাওয়ার্ড-এর মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ফরাসি প্রযোজক হচ্ছেন ইলান জিরার্ড। যিনি ‘মার্চ অব দ্য পেঙ্গুইন’, ‘গুডবাই বাফানা’, ‘ফাইনাল পোর্ট্রেট’-এর মতো বিখ্যাত কিছু চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ছবিটির নির্মাণ সহযোগী প্রতিষ্ঠান অমিতাভ রেজার হাফ স্টপ ডাউন। সম্পাদনা করেছেন আমেরিকার ক্রিস্টেন স্প্রাগ, রোমানিয়ার লুইজা পারভ্যু ও ভারতের শঙ্খ। শব্দ ও রঙ সম্পাদনার কাজটি হয়েছিল প্যারিসের দুটি বিখ্যাত স্টুডিওতে।
বিস্তারিত জানতে: https://www.bfi.org.uk/london-film-festival/screenings/salt-our-waters-nonajoler-kabbo?fbclid=IwAR2y7LkGWJXKNuf6ur1CK-x5or9-QB6DnUuP0Ym9c630PAiPoQidDM16ypE
ছবিটি দেখার উপায়:
https://whatson.bfi.org.uk/lff/Online/
পুরস্কারসমূহ:
– ২০১৬: চিত্রনাট্যের জন্য এই ছবি পেয়েছিল ‘স্পাইক লি রাইটিং গ্রান্ট’।
– ২০১৬: ভারতের ফিল্ম বাজারের কে-প্রোডাকশন মার্কেটে নির্বাচিত হয়েছিল সিনেমাটির চিত্রনাট্য। সেখানেই ইলান জিরার্ডের সাথে সুমিতের পরিচয়।
– ২০১৭: ছবিটি বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র অনুদান পেয়েছিল ৫০ লাখ টাকা।
– ২০১৮: ৮০ লাখ টাকা অনুদান পেয়েছিল ফরাসি সরকারের সিএনসির ‘সিনেমা দ্যু মন্ড’ ফান্ড থেকে।
– ২০২০: সম্প্রতি ছবিটি টরিনো ফিল্ম ল্যাব অডিয়েন্স (টিএফএল) ডিজাইন ফান্ড ২০২০ জিতেছে। এর ফান্ডের আওতায় পেয়েছে ৪৫ হাজার ইউরো, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪৫ লাখ টাকার সমান। এ অর্থের মাধ্যমে চলচ্চিত্রটিকে বিশ্বের দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করবেন পরিচালক সুমিত।