লন্ডনে করোনার তহবিল গঠন করা দবিরুল পাচ্ছেন আরেকটি পদক
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডনঃ করোনাভাইরাস মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ৪ লাখ ২০ হাজার পাউন্ডের তহবিল সংগ্রহ করায় ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন সম্মাননা পাচ্ছেন শতবর্ষী ব্রিটিশ বাংলাদেশি দবিরুল ইসলাম চৌধুরী।
সিটি অব লন্ডন কর্পোরেশন জানিয়েছে, বুধবার এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দবিরুল ইসলাম চৌধুরীকে ‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ সম্মাননা দেয়া হবে।সিটি অব লন্ডনের নির্বাচিত কাউন্সিলর মনসুর আলী ও প্রেম গয়াল, ব্যারোনেস উদ্দিন এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার উপস্থিত থাকবেন সেই অনুষ্ঠানে।করোনাভাইরাস সংকটে অসহায় মানুষের জন্য তহবিল সংগ্রহের নজির গড়ায় শতবর্ষী দবিরুল এ বছর ব্রিটিশ রানি এলিজাবেথের জন্মদিনে অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই) খেতাবও পেয়েছেন।
তার ছেলে আতিক চৌধুরী বলেন, আমার বাবাকে এই সম্মাননার জন্য মনোনীত করায় আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। লন্ডনের সব জ্যেষ্ঠ নাগরিক এবং প্রবাসী, যারা এ শহরকে এত প্রাণবন্ত ও বহু সংস্কৃতির মিলনস্থলে পরিণত করেছেন, তাদের সবার পক্ষ থেকে আমার বাবা এই সম্মাননা গ্রহণ করবেন।যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের বো এলাকার বাসিন্দা শতবর্ষী বাঙালি দবিরুল ইসলাম চৌধুরীকে এর আগে অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই) পদকে ভূষিত করা হয়েছে।এ বছর রোজার মাসে পায়ে হেঁটে করোনাভাইরাস তহবিলের জন্য প্রায় সাড়ে চার লাখ পাউন্ড চাঁদা তুলে তিনি এ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। খবর বিবিসির।
রানি এলিজাবেথের জন্মদিন উপলক্ষে ব্রিটেনের সমাজ-জীবনে যারা বিশেষ ভূমিকা রাখেন, প্রতি বছর তাদের সম্মান জানানোর রীতি রয়েছে।দবিরুল তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এ দুর্লভ সম্মান পেয়ে আমি নিজেকে অত্যন্ত ভাগ্যবান বলে মনে করছি। আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।চলতি বছর জুন মাসে এ সম্মাননা ঘোষণার পরিকল্পনা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারীর সময় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী, অর্থদাতা এবং স্বেচ্ছাসেবকদের এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তা স্থগিত করা হয়।
গত রমজান মাসের পুরোটা সময় দবিরুল ইসলাম চৌধুরী রোজা রেখে প্রতিদিন তার বাড়ির পেছনের ৮০ মিটার বাগানে পায়ে হেঁটে ৯৭০ বার চক্কর দিয়েছেন।তার উদ্দেশ্য ছিল– বাংলাদেশ, ব্রিটেন এবং আরও কিছু দেশের করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত মানুষের সহায়তার জন্য অর্থসাহায্য সংগ্রহ করা।ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন টম মুর তার বাড়ির বাগানে পায়ে হেঁটে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য যেভাবে প্রায় সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড চাঁদা তুলেছিলেন; তা দেখে উৎসাহিত হয়েছিলেন দবিরুল ইসলাম চৌধুরী।রোজার মাসের পুরোটা সময় তিনি একইভাবে পায়ে হেঁটে মোট চার লাখ ২০ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করেন।
এর মধ্যে এক লাখ ১৬ হাজার পাউন্ড দেয়া হয় স্বাস্থ্য বিভাগ এনএইচএসকে। বাকি অর্থ ৫২ দেশের ৩০টি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করা হয়।দবিরুল ইসলাম চৌধুরীর এ প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বিরোধী দল লেবার পার্টির প্রধান স্যার কিয়ার স্টার্মার বলেছেন, আমাদের সবার কাছে তিনি প্রেরণার এক উৎস।গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দবিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমি ব্রিটেনের বাঙালি সমাজ, বয়স্ক সমাজ এবং অভিবাসী সমাজের পক্ষ থেকে এই ওবিই পদক গ্রহণ করছি। রানির দফতর থেকে ওবিই পদকপ্রাপ্তির চিঠি পেয়ে তিনি বেশ অবাকই হয়েছিলেন।