শান্তিগঞ্জ মুসল্লি ও নারীদের উপর হামলার ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের সিদখাই গ্রামে মসজিদের নামে সরকারের খাস ১নং খতিয়ানের,এস এ দাগ নং ১৭২ এবং আর এস ১৬৫ দাগের এক একর ৪৪ শতক জলাশয়(বিল)টি দখলে নিতে গ্রামের সন্ত্রাসীচক্রের হোতা আজির উদ্দিন,আমির হোসেন,শামীম,মনু,আলী,গংদের নেতৃত্বে মসজিদের মুসল্লি,ক্যাশিয়ার ও নারীদের উপর হামলা,মসজিদের উন্নয়নে রক্ষিত ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ফেইসবুকে অপপ্রচারের প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সিদখাই গ্রামবাসির আয়োজনে গ্রামের মসজিদের সামনের রাস্তায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুই শতাধিক মুসল্লিরা অংশগ্রহন করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন সিদখাই গ্রামের মসজিদের মুতাওয়াল্লী আব্দুল কদ্দুছ,মসজিদের সাবেক ক্যাশিয়ার সমছু মিয়া,বর্তমান ক্যাশিয়ার মাহমদ আলী,দরগাপাশা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো. আমিরুল ইসলাম, সিদখাই স্কুল কমিটির সহ সভাপতি আখলুছ মিয়া,সাবেক ইউপি সদস্য হামিদুর রহমান বতু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত ৪ এপ্রিল মসজিদের মুসল্লিরা নামাজ আদায় করে মসজিদ থেকে বের হলেই গ্রামের মৃত আক্রম উল্ল্যার ছেলে মো. আজির উদ্দিন, মৃত জয়নাল মিয়ার ছেলে আমির হোসেন,তরমুজ আলীর ছেলে শামীম,মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে (বর্তমান ইউপি সদস্য) মনু মিয়া,হরমুজ আলীর ছেলে আলী হোসেন,দিলাল হোসেন,আজির উদ্দিনের ছেলে রুমান মিয়া,মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে আজিজুল ইসলাম,মৃত এরশাদ আলীর ছেলে দ্বীন ইসলাম,মকদ্দুছ আলীর ছেলে জাবেদ মিয়া,সফর আলীর ছেলে চন্দন মিয়া,সফিক মিয়া,মাসুক মিয়া,মৃত আহমদ আলীর ছেলে চান্দালী,মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে ফয়াজ মিয়া,মৃত জাবস উল্ল্যার ছেলে কনর আলী ও নিম্বর আলী গংদের নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসীচক্রটি,মুসল্লি,মুতাওয়াল্লী আব্দুল কদ্দুছ,ক্যাশিয়ার মাহমদ আলী এবং তার স্ত্রীসহ বেশ কয়েকজনের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে ৮/১০ জনকে গুরুতর আহত করেন এবং মসজিদের উন্নয়নে ক্যাশব্যাক্রে থাকা ৫০ হাজার টাকা লুঠ করে নিয়ে যান। পরে হামলাকারীরা ক্যাশিয়ার ও তার স্ত্রী সাফিয়া বেগমের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অপপ্রচার করে তাদের সম্মানহানি ঘটায়। হামলাকারীদের মধ্যে সন্ত্রাসী শামীম ও আমির হোসেন একাধিক ডাকাতি মামলায় জেল কেটেছেন বলে দাবী মানববন্ধনকারীদের। হামলাকারীরা হামলার ঘটনা ঘটিয়ে উল্টো গ্রামের মুসল্লি সহজ সরল মানুষজনের নামে ইতিমধ্যে ৫টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে বলেও দাবী তাদের।
অবিলম্বে সকল হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ সুপারের নিকট জোর দাবী জানান। এদিকে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করায় মঙ্গলবার দুপুরে পূনরায় মুসল্লিদের বাড়িঘরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় এবং তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে বলে জানা যায়। আহতরা হলেন,মসজিদের ক্যাশিয়ার মাহমদ আলীর বৃদ্ধা মাতা ফলকজান বিবি(৭০),ফয়সল মিয়া,মতিন মিয়া,জেনাউর রহমান,নুর মিয়া,দুদু মিয়াসহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য গত ১৯৫২ সাল থেকে এই জলমহালটি সিদখাই গ্রামবাসী মসজিদের উন্নয়নের স্বার্থে ব্যবহার করে আসছিলেন। ২০২১ সালের মে মাসে শান্তিগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নুর হোসেন, তৎকালীন শান্তিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কাজি মোক্তাদির হোসেন চৌধুরী,দরগাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান মো. মণির হোসেন,থানার এস আই দেবাশীষ বাবু,এস আই জহির মিয়া ও ওয়ার্ড মেম্বার সমুজ আলী,সা্েক মেম্বার বতু মিয়া,আব্দুুল কাহার,ভমভমি বাজার কমিটির সাবেক সাধারন সম্পাদক এস এম চমরু মিয়া,আব্দুল হান্নানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন । তাদের উপস্থিতিতে এই ধমীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদের উন্নয়নের স্বার্থে এই সরকারী খাস জলমহালটি লিখিতভাবে হস্তান্তর করেন এবং আজকে যারা মসজিদে হামলা করে জলমহালটি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তাদের ও স্বাক্ষর ছিল।এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটির সদস্য মো. সামছু মিয়া জানান,এই জলমহালটির মোট এক একর ৪৪ শতকের মধ্যে ৪০ শতক জলমহাল হওয়াতে জলমহালের আয় থেকে মসজিদের উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা হচ্ছে আর বাকি এক একর ৪ শতক জমিটুকু জোরপূর্বক হামলাকারী আজির উদ্দিন ও তার চাচাতো ভাই দ্বীন ইসলাম ভোগদখল করে আসছেন। এই মসজিদের সম্পূর্ণ জায়গাটুকুৃ ওদের কবল থেকে উদ্ধার করে মসজিদের উন্নয়নখাতে সংযুক্ত করার দাবী জানান।
এ ব্যাপারে ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুহেল আহমদ মনু মিয়া মসজিদের মুসল্লিদের উপর হামলার ঘটনা অস্বীকার করে জানান,খাস খতিয়ানের বিলটির মোট এক একর ৪৪ শতকের মধ্যে বিল আছে ৩০শতক বাকিটা জমি হিসেবে ভোগদখল করছেন গ্রামের কয়েকজন।এ ব্যাপারে দরগাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.সুফি মিয়া জানান দীর্ঘদিন ধরে এই সরকারের খাস খতিয়ানের বিলের অংশটি থেকে আয় ব্যয় মসজিদের উন্নয়নে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর বাকি অংশটুকু জমি হওয়ার কারণে একপক্ষের আজির উদ্দিনের চাচাতো ভাই দ্বীন ইসলাম ভোগদখল করে আসছেন। বিষয়টি নিয়ে আগামী সপ্তাহে উভয়পক্ষকে নিয়ে পরিষদে বসে ফয়সালা করা হবে বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার াফিসার ইনচার্জ মো.খালেদ চৌধুরী হামলার ঘটনা অবগত নন তবে কেহ অবহিত করলে কিংবা অবিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।