শিমুল বিশ্বাসসহ সাতজন ৪ দিনের রিমান্ডে
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ রামপুরা বিটিভি ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ সাতজনকে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলম এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।অন্য যাঁদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল আলম মজনু, ১২ দলের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, মো. মহিউদ্দিন হৃদয়, সাবেক সংসদ সদস্য রশীদুজ্জামান মিল্লাত ও মো. তরিকুল ইসলাম তেনজির।এই সাতজনকে বনানী থানায় দায়ের করা সেতু ভবনে হামলার মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ।পরে রামপুরা থানার বিটিভি ভবনে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। অন্যদিকে রিমান্ড আবেদন বাতিল করে প্রত্যেকের জামিনের আবেদন করেন আসামিদের আইনজীবীরা। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেককে গ্রেপ্তার দেখানোর পর চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, শিমুল বিশ্বাসসহ অন্য আসামিরা কোটাবিরোধী আন্দোলনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় ধ্বংসযোগ্য চালানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তাঁরা রামপুরা টিভি ভবনে হামলার ইন্ধনদাতা। তাঁরা অর্থেরও জোগানদাতা। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এর পেছনে আরও যাঁরা জড়িত তাঁদের নাম জানা যাবে এবং কেন তাঁরা রামপুরা টিভি ভবনে হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন তার উৎস জানার জন্য রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।রামপুরা থানার মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৮ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা ডিআইটি রোডগামী রামপুরা ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও বিটিভি ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।এরপরই বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশে ও সক্রিয় অংশগ্রহণে অজ্ঞাতনামা তিন-চার হাজার কর্মী দলবদ্ধ হয়ে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন।আসামিরা দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে অবৈধভাবে বিটিভি ভবনের প্রধান চারটি গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর তাঁরা ভবনের ভেতর ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালান।
টেলিভিশন ভবনে কর্মরত বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ও পদবি উল্লেখ করে খোঁজাখুঁজি করে প্রাণনাশের হুমকিও দেন। নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে তাঁরা বাংলাদেশ টেলিভিশনের ভেতরে থাকা সরকারি মালামাল ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধন করেন। যার ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবি রাত ৯টার দিকে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি সম্প্রচারকাজে নিয়োজিত পোর্টেবল ডিএসএনজি সিস্টেমের সব সম্প্রচার যন্ত্রপাতি, এসব যন্ত্রপাতি পরিবহন কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, কেন্দ্রীয় শীতাতপ ব্যবস্থার ক্ষতিসাধন, অগ্নিসংযোগ, ১৭টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ৯টি গাড়ি ভাঙচুর, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২১টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর, বিটিভির মূল ভবনের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ঢাকা কেন্দ্রের রিসিপশনে অগ্নিসংযোগ, ট্রান্সপোর্ট ভবনে অগ্নিসংযোগ, ক্যানটিন, অডিটরিয়ামে অগ্নিসংযোগ, মেকআপ শাখা ভাঙচুর, ডিজাইন শাখার মেকআপ (ওয়ার্কশপ, স্টোর, ওয়ার্ডরোব ও গ্রাফিক্স রুম) রুমে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে। এই মামলার বাদী বিটিভির কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার।