শিমের বাম্পার ফলনে বাহুবলের কৃষকদের মুখে হাসি
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় শীত মৌসুমের সবজি শিমের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এতে শিম চাষীদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এখন শিমের সমারোহ। প্রতিদিন এখানকার উৎপাদিত শিম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী, সুখচর, যাদবপুর, মিরেরপাড়া, লামাপুটিজুরী, আব্দানারায়ণ, রাজসূরত, ভবানীপুর, কল্যাণপুর, হাজিনাদাম গ্রামসহ পুরো উপজেলাজুড়ে শীতকালীন সবজি হিসেবে শিমের চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বাহুবল উপজেলার সীমানায় প্রবেশ করার পর মহাসড়কের দু’পাশে বিস্তীর্ণ এলাকায় সবুজ শিমের বাগান দৃষ্টিগোচর হয়। এ সময় শিম বাগানের পরিচর্যায় কৃষকদের সাথে তাদের পরিবারের মহিলা ও শিশুদেরকেও তৎপর দেখা যায়। গত ২৫/২৬ বছরে ওই এলাকায় বিশেষ করে গুঙ্গিয়াজুরী হাওরের পাশে অর্থকরী ফসল হিসেবে শিম চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বাহুবলের দ্বিগাম্বর, মিরপুর, ডুবাঐ বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতকালীন অন্যান্য সবজির পাশাপাশি বাজারে দেশি জাতের শিমের প্রচুর সরবরাহ। বর্তমানে এখানকার বাজারে প্রতি কেজি দেশি শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। প্রতিদিন ভোর বেলা জমে উঠে দ্বিগাম্বর বাজার। এ সময় ব্যবসায়ীরা পাইকারী দরে শিম কিনে ট্রাক বা বিভিন্ন যানবাহনে করে তা ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারী বাজারে নিয়ে যান। দ্বিগাম্বর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান, বাজারে বেশি পরিমাণে স্থানীয়ভাবে চাষকৃত শিম আসতে শুরু করেছে। দেশি শিমের স্বাদ আলাদা হওয়ার কারণে ক্রেতারা অন্য সবজির পাশাপাশি শিম বেশি কিনছেন। পাইকারী ব্যবসায়ী সানু মিয়া জানান, চাষীদের ক্ষেত থেকে নগদ টাকায় শিম কিনে ট্রাকে করে পাঠানো হয় ঢাকা-সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে। কয়েক বছর ধরে এ ব্যবসায় জড়িয়ে আমার ৫ সদস্যের সংসার ভালোই চলছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর বাহুবলে প্রায় ১ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন সবজির চাষ হয়েছে। গত বছর ৫শ ৫০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হলেও এ বছর চাষাবাদকৃত জমির পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ বিষমুক্ত শিম চাষের ব্যাপারে কৃষকদের জৈব বালাইনাশক, জৈব সার ব্যবহার বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এছাড়া সারা বছর শিম উৎপাদনের লক্ষ্যে সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয় থেকে নতুন ধরনের শিমের বীজ সংগ্রহ করা হয়েছে। যা কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা ছাড়াও তাদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।