শুরু হলো শারদীয় দুর্গোৎসব
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ সিলেটসহ সারাদেশে ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শুরু হলো বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। ২০ অক্টোবর শুক্রবার ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া উৎসব ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে।
দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যূহ বা আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা, এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামে অন্য একটি অর্থ করেছেন । দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাঁকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন।
হিন্দু পূরাণ মতে দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল। কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবীকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া সত্ত্বেও শরতকালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যালোকে (পৃথিবী) আসবেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রোগ-শোক, হানাহানি, মারামারি বাড়বে। অন্যদিকে কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায়ও নেবেন ঘোড়ায় চড়ে। যার ফলে জগতে মড়ক ব্যাধি এবং প্রাণহানির মত ঘটনা বৃদ্ধি পাবে।
সিলেট জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এবার নগর ও জেলায় ৬১৭টি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। তার মধ্যে সার্বজনীন ৫৬৯টি ও পারিবারিক ৪৮টি।
নগরিতে ১৫১টি পূজার মধ্যে সার্বজনীন ১৩৪টি ও পারিবারিক ১৭টি। জেলায় ৪৬৬টি পূজার মধ্যে সার্বজনীন ৪৩৫টি ও পারিবারিক ৩১টি।
জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ৬৬, বালাগঞ্জ উপজেলায় ৩২, কানাইঘাট উপজেলায় ৩১, জৈন্তাপুর উপজেলায় ২৩, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ৪০, বিশ্বনাথ উপজেলায় ২৫, গোয়াইনঘাট উপজেলায় ৩৯, জকিগঞ্জ উপজেলায় ৯৮, বিয়ানীবাজার উপজেলায় ৫০, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ২৮, দক্ষিণ সুরমায় ১৫ এবং ওসমানীনগর উপজেলার ৩৪টি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে পূজা উদ্যাপন পরিষদ জেলা সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন ঘোষ বলেন, সিলেট জেলায় শান্তিপূর্ণভাবে পূজা আয়োজনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পূজা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি।
পূজা উদ্যাপন পরিষদ নগর শাখার সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত বলেন, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি ও প্রশাসন মিলে দুর্গোৎসব সফল করার জন্য ১৯ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা যথাযথভাবে মানা হলে দুর্গাপূজায় কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। সবার প্রতি অনুরোধ সম্মিলিতভাবে এই নির্দেশনা যেন আমরা মেনে চলি।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, যারা পূজা উদযাপনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। সকলের সহযোগিতায় সফলভাবে পূজা উদ্যাপনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফ বলেন, সবার সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদার সাথে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় দুর্গাপূজা উদ্যাপনের জন্য নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।