প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্মূল কমিটির স্মারকলিপিঃ যুদ্ধাপরাধীদের ফিরিয়ে নিতে যুক্তরাজ্য সরকারের সাথে কার্যকর যোগাযোগ শুরুর আহবান
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবোনালে দন্ডিত যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মঈনুদ্দিনসহ যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অন্তত ২০ জন অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিতে যুক্তরাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট মন্ত্রনালয়ের সাথে কার্যকর যোগাযোগ শুরু করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহবান জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখা।
লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রেরিত এক স্মারকলিপিতে এমন আহবান জানায় নির্মূল কমিটি।
১৭ আগস্ট, সোমবার সংগঠনের যুক্তরাজ্য শাখার দুই সহসভাপতি সৈয়দ এনামুল ইসলাম ও হরমুজ আলী এবং সাধারণ সম্পাদক জামাল আহমেদ খানের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল লন্ডনে দায়িত্বরত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের সাথে সাক্ষাত করে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে এই স্মারকলিপি পেশ করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সুবর্ণ জয়ন্তী সামনে রেখে ব্রিটিশ সরকারের সাথে একসাথে কাজ করার এক অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দন্ড কার্যকর করে ৭১এর মুক্তিযুদ্ধে স্বজন হারানো পরিবারগুলোকে কিছুটা হলেও শান্তনা দিতে পারে বাংলাদেশ সরকার। বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবোনালে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মঈনুদ্দিনসহ অন্তত ২০জন একাত্তরের অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ব্রিটেনে বসবাস করছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের চরমপন্থা বিষয়ক একটি রিপোর্টে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চৌধুরী মঈনুদ্দিনের নাম উল্লেখিত হওয়ার পর দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল রিপোর্টটি রিটুইট করার মাধ্যমে চৌধুরী মঈনুদ্দিন যে যুদ্ধাপরাধী যুক্তরাজ্য সরকার সেটিরই স্বীকৃতি দিয়েছে বলে আমরা মনেকরি।’
স্বারকলিপিতে নির্মূল কমিটি নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় কর্তৃক চৌধুরী মঈনুদ্দিনকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যায়িত করার এমন সুযোগ মুহূর্তে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবোনালের দন্ড প্রদানের রায়ের অনুলীপীসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দিয়ে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে বাংলাদেশের পূর্ণ সহায়তা দেয়া এই মুহূর্তে খুবই জরুরী। আর এই প্রক্রিয়াটি দ্রুতই যাতে শুরু হয় তারজন্য প্রয়োজন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা’। বিষয়টির প্রতি গুরুত্বারোপ করে দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কার্যকর যোগাযোগ শুরু করতে প্রধানমন্ত্রী দ্রুতই নির্দেশনা দেবেন, স্মারকলিপিতে নির্মূল কমিটি নেতৃবৃন্দ এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
হাই কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেয়ার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন হাইকমিশনের মিনিস্টার (রাজনৈতিক) এএফএম জাহিদ উল ইসলাম।
স্মারকলিপি প্রদান শেষে মন্তব্য করতে গিয়ে যুক্তরাজ্য নির্মূল কমিটি নেতা সৈয়দ এনামুল ইসলাম সত্যবাণীকে বলেন, ‘বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবোনালকে বিতর্কিত করতে যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সমর্থকদের অব্যাহত অপপ্রচার নস্যাৎ করতে ব্রিটেনের আদালতে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলের বিরুদ্ধে চৌধুরী মঈনুদ্দিনের দায়েরকৃত মামলা বাংলাদেশের জন্য যেমন এক সুবর্ণ সুযোগ, ঠিক তেমনি ঝুঁকিও রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত দিয়ে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সাথে কতটুকু কার্যকর যোগাযোগ সৃষ্টি করতে পারে তার উপরই নির্ভর করছে এ বিষয়টির ভবিষ্যত। মূলত এই সম্ভাবনা ও ঝুকির বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতেই নির্মূল কমিটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই স্মারকলিপি দিয়েছে’।