সিলেটে আধুনিক বাস টার্মিনাল পরীক্ষামূলক চালু

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সিলেটে নির্মিত আধুনিক বাস টার্মিনাল পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উদ্বোধনের জন্য ধীরে ধীরে প্রস্তুত করা হচ্ছে দেশের সর্বাধুনিক কদমতলি বাস টার্মিনাল। নির্মাণকাজ শেষে আধুনিক বাস টার্মিনালটির সুযোগ-সুবিধাসমূহ যাচাই করা হচ্ছে। যাতে পরিবহন সংশ্লিষ্ট এবং যাত্রী সাধারণ সেবাসমূহ যথাযথভাবে গ্রহণ করতে পারেন।১৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুরে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু পরিবহন বাস টার্মিনালের আগমন এলাকায় প্রবেশ করে। যাত্রী নামিয়ে দেয়া ও যথাযথ স্থানে পরিবহন পার্কিংয়ের মহড়ায় অংশ নেয় বাসগুলো।নগর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পর্যটন নগরি সিলেটে দেশের সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন এই বাস টার্মিনাল শিগগিরই উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনের প্রস্তুতি হিসেবে পরীক্ষামূলক সেবা চালুর সময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, দেশ সেরা সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এই বাস টার্মিনাল সিলেটের জন্য গর্বের একটি প্রতিষ্ঠান। কদমতলি বাস টার্মিনাল চালু হলে পরিবহন ব্যবস্থায় সিলেট বিশ্বমানে যুক্ত হবে।

মেয়র আরিফ আরও বলেন, সিলেটের পরিবহন সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে যে সকল সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে সবাইকে। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না। যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করে বাস টার্মিনালের সেবা প্রদানে বিঘœ সৃষ্টি করা যাবে না। সবাই মিলে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির সেবার মান ও সুবিধাসমূহ যাত্রী সাধারণের জন্য নিশ্চিত করতে পারলেই সার্থকতা আসবে।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর মোহাম্মদ তৌফিক বকস, প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর এডভোকেট রোকসানা বেগম শাহনাজ, কাউন্সিরর রেবেকা আক্তার লাকী, সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বদরুল হক, প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর, নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান, সিলেটের পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট- এমজিএসপি প্রকল্পে সিলেট সিটি কর্পোরেশন দেশের সর্বাধুনিক সুবিধাসম্বলিত ‘কদমতলী বাস টার্মিনাল’ নির্মাণ করছে। ৮ একর ভূমিতে ৬৫ (পঁয়ষট্টি) কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পে বিমানন্দরের আদলে বহির্গমন ও আগমনের আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্থাপনার দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে গোলাকার পাঁচতলা একটি টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়, কন্ট্রোল রুম, পুলিশ কক্ষ এবং পর্যটন কার্যালয় স্থাপন করা হবে।

যাত্রী উঠানামার জন্য পৃথক টার্মিনাল ভবন, সুপরিসর পার্কিং ব্যবস্থা, পরিবহন সেবাদানকারীদের জন্য যাবতীয় সুবিধা সম্বলিত পৃথক ভবন, রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্ট, পর্যাপ্ত যাত্রী বিশ্রামাগার, নারী, পুরুষ ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য আলাদা আলাদা শৌচাগার, ব্রেস্ট ফিডিং জোন, স্মোকিং জোন, ছোট দোকান, অসুস্থ যাত্রীদের জন্য সিক বেড, প্রার্থনা কক্ষসহ সকল প্রকার আধুনিক সেবা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে এই স্থাপনায়। এছাড়া, পরিবহন মালিক শ্রমিকদের সভা অনুষ্ঠানের জন্য বিশাল হলরুম এবং যানবাহনের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়ার্কশপ স্থাপন করা হয়েছে।
কদমতলি বাস টার্মিনাল প্রকল্পের নকশা প্রণয়নে নগরির কিনব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি ও আসাম টাইপ বাংলোর স্থাপত্যশৈলী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে নকশা প্রণয়ন করেছেন স্থপতি সুব্রত দাশ, স্থপতি রবিন দে এবং স্থপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

You might also like