সিলেটের আজিজ হত্যা মামলার রায় ঘোষণাঃ একজনের যাবজ্জীবন
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ প্রায় দুই যুগ পর সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় লেবার সর্দার আব্দুল আজিজ উরফে আজিজ হত্যা মামলায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২৯ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে সিলেটের বিভাগীয় বিশেষ জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আহম্মদ আলী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীর নাম এমই (৫৫)। তিনি জকিগঞ্জ থানার হাতিডহর গ্রামের জমির আলী ওরফে ভেড়াই মিয়ার ছেলে। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, আব্দুল আজিজ ওরফে আজিজ এলজিআরডি কন্ট্রাক্টর আরিফ চৌধুরীর অধীনে গোলাপগঞ্জ উপজেলার রানাপিং থেকে ফাজিলপুর রাস্তা পাকাকরণ কাজে লেবার সর্দার হিসেবে কাজ করছিলেন। ১৯৯৯ সালের ১৪ জুলাই দুপুর আড়াইটায় আজিজ ও এমই ছাড়া অন্য লেবাররা দুপুরের খাবার খেতে চলে যান। তখন এমইর সাথে আজিজের রাস্তার কাজ করা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। দু’জনের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আসামী এমই উত্তেজিত ও ক্ষিপ্ত হয়ে তার হাতে থাকা কোদাল দিয়ে আজিজকে মাথার বাম পাশে আঘাত করেন।
এ সময় আজিজ রক্তাক্ত হয়ে বাচাঁও বাচাঁও বলে শোর-চিৎকার দিলে অন্য লেবারসহ লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে মুমুর্ষ অবস্থায় দ্রুত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে দু’দিন চিকিৎসারত থাকার পর ১৬ জুলাই রাত ৩টার দিকে হাসপাতালেই আব্দুল আজিজ মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় নিহত আজিজের পিতা জকিগঞ্জ থানার হাতিডহর গ্রামের আব্দুর রহিম ওরফে নুনু মিয়া বাদি হয়ে একমাত্র লেবার এমইকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং-১২(১৭-০৭-১৯৯৯),দায়রা মামলা নং- ৩৮/২০০০)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ৫ ডিসেম্বর গোলাপগঞ্জ থানার এসআই মো. আব্দুল খালেক একমাত্র এমইকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র নং-১৪৮) দাখিল করেন এবং ২০০০ সালের ৫ জুলাই আদালত চার্জ গঠন করে মামলার বিচার শুরু করেন।
দীর্ঘ শুনানী ও ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার আদালত আসামী এমইকে ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মোঃ ফখরুল ইসলাম ও আসামীপক্ষে অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুর রকিব মামলাটি পরিচালনা করেন।