সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি সুনামগঞ্জে প্লাবিত হচ্ছে নতুন এলাকা

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির সিলেটে কিছুটা উন্নতি হলেও সুনামগঞ্জে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ভারতের বরাক নদী থেকে প্রবলবেগে পানি ঢুকে জকিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোশাররফ হোসেন ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।এদিকে, সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজারে বন্যার পানি কিছুটা কমলেও শান্তিগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা ও জামালগঞ্জ উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ^ম্ভরপুর, তাহিরপুর ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় সিলেটের কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, সুনামগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়ক, বিশ^ম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে সুনামগঞ্জ জেলার সাড়ে ৪ শতাধিক পুকুরের মাছ। সরকারি ত্রাণ সহায়তা শুরু করা হলেও অপ্রতুল ত্রাণ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্যের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। প্লাবিত এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে জ্বর, আমাশয়, ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ।

সিলেটের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত শুক্রবার পর্যন্ত সিলেট জেলার বন্যার্তদের মধ্যে ৩০৫ মেট্রিক টন চাল, ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. এসএম শাহরিয়ার জানান, বন্যা প্লাবিত এলাকায় পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দুর্গত এলাকায় ওষুধ, খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা জানান, কানাইঘাট উপজেলার সার্বিক ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গতকাল সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩৬ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার ২নং লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম, ৫নং বড়চতুল, ৬নং সদর, পৌরসভা, ৭নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম, ৮নং ঝিঙ্গাবাড়ী, ৯নং রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের মানুষজন এখনও পানিবন্দী অবস্থায় দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। অধিকাংশ মানুষদের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে আশ্রয়কেন্দ্রে মানবেতর জীবন পার করছেন। গতকাল সকাল থেকে পৌরসভাসহ উচুঁ স্থানের পানি কমে গেলেও, কানাইঘাট উত্তর বাজারে ও মধ্যবাজারে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখনও বানের পানিতে তলিয়ে আছে এবং সুরমা ডাইকের ভাঙ্গন দিয়ে প্রবল স্রোতে লোকালয়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া, গতকাল দিনভর উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকায় জনপ্রতিনিধি এবং সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে চালসহ শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা জানান, গোয়াইনঘাটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে সময় বাড়ার সাথে সাথে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ আর হাহাকার আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গো-খাদ্য এবং বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, প্রবাসীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করলেও তা খুবই অপ্রতুল।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রচুর পরিমাণ গো-খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। কৃষকরা তাদের গবাদি পশু নিয়ে পড়েছেন মহাবিপাকে। খাদ্যের যোগান দিতে না পেরে অনেকে স্বল্পমূল্যে নিজেদের হালের গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন। এছাড়া অধিকাংশ পরিবারে বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে। এতে করে নানান রোগব্যাধি দেখা দিয়েছে। এদিকে উপজেলা সদরের সাথে ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলছে। অপরদিকে ১০টি আশ্রয় কেন্দ্র এখনও চালু রয়েছে। এতে ৩৬১ জন পানিবন্দী মানুষ রয়েছেন। তাছাড়া ২২০টি গবাদিপশুও আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে পানি কমছে ধীর গতিতে। কোম্পানীগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখনো বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, ফসলী জমি ডুবে আছে বন্যার পানিতে। বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। খাবার, পানি ও গো-খাদ্যের অভাবের মধ্যে দিন পার করছে বানভাসি মানুষগুলো।উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো এখনো পানিতে নিচে। ইউএনও’র সরকারি বাসভবন, উপজেলা ভূমি অফিস, এলজিইডি অফিস, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস এবং কোম্পানীগঞ্জ থানা কম্পাউন্ডের ভেতর এখনো বন্যার পানি রয়েছে। তবে, দুয়েকদিনের মধ্যে পানি নেমে যাবার সম্ভাবনা আশা করা হচ্ছে। ইউএনও লুসিকান্ত হাজং বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
জৈন্তাপুর থেকে সংবাদদাতা জানান, জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত, চিকনাগুল, ফতেহপুর ও চারিকাটা ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, চারিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান করিম বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন। ইউএনও’ আল বশিরুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিপামনি দেবী জানান, বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির ওপর তাদের মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।
সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাদা জানান, পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যার পানি সুনামগঞ্জের উজানে কিছুটা কমলেও ভাটিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। জেলার ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় বন্যার পানি কিছুটা কমলেও শান্তিগঞ্জ উপজেলা, দিরাই, শাল্লা ও জামালগঞ্জ উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ^ম্ভরপুর, তাহিরপুর ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে জেলার সাড়ে ৪ শতাধিক পুকুরের মাছ। এদিকে, ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ^ম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলায় বন্যার পানি কিছুটা কমলেও জেলার ভাটি অঞ্চল দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলায় বন্যার পানি বাড়তে শুরু করেছে। দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের কলিয়ার কাপন গ্রামের ইউপি সদস্য রুমন চৌধুরী জানান, তার ওয়ার্ডে বেশ কিছু বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢুকেছে। তাদের তিনি গ্রামের বাজারে আশ্রয় নিতে সাহায্য করছেন। এ বিষয়টি তিনি ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির লাভলুকে অবহিত করেছেন।
ছাতক উপজেলার জাতুয়া গ্রামের জয়নাল আবেদীন জানান, তিনি ৬টি পুকুরে মাছ চাষ করেছিলেন। এসব পুকুরে রুই, মৃগেল, কাতলা, গ্রাসকার্প ও পাঙ্গাসসহ বিভিন্নপ্রজাতির প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে বন্যার পানিতে।
সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনীল মন্ডল জানান, গতকাল পর্যন্ত জেলার তিন শতাধিক মৎস্যচাষীর সাড়ে ৪ শত পুকুরের পোনা মাছ ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। এতে কমপক্ষে আড়াই কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, বন্যার পানিতে ডুবে গেছে সুনামগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়ক, বিশ^ম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়ক ও ছাতক-গোবিন্দগঞ্জসহ জেলার চারটি আঞ্চলিক সড়ক। এসব সড়কে গত চারদিন ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল ৩টায় সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। একই সময়ে জেলার ছাতক উপজেলা সদরে সুরমার পানি বিপদসীমার ১৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গতকাল সকাল ৬টায় সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘন্টায় ৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে ২১৮ মিলিমিটার। এ কারণে ব্যাপক পাহাড়ি ঢল নামছে সুনামগঞ্জে।
এদিকে, সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমলেও শহরের নবীনগর, তেঘরিয়া, বড়পাড়া, হাজীপাড়া, নতুনপাড়া, শান্তিবাগ, বনানীপাড়ার কিছু ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকেছে। সুনামগঞ্জ পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মো. কাউছার জানান, গতকাল সকালে তিনি নবীনগর, বনানীপাড়া ও মোহাম্মদপুর এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসব এলাকার কিছু কিছু রাস্তা-ঘাট ডুবে বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে।
সুনামগঞ্জ সদরের ইউএনও ইমরান শাহরিয়ার জানান, সদর উপজেলার সুরমা ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ৫শত পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, বন্যা মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তÍুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোতে ৪০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। জেলার ১২টি উপজেলায় আরো ৫ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ রয়েছে। সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. মো. আহমদ হোসেন জানান, ছাতক উপজেলা কৈতক উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে বন্যার পানি বৃহস্পতিবার ঢুকলেও গত শুক্রবার বিকেল থেকে কমতে শুরু করেছে।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার থেকে সংবাদদাতা জানান, ভাটিতে পানির টান না থাকায় দোয়ারাবাজারে বন্যার পানি ধীর গতিতে কমছে। সুরমা, চেলা, মরাচেলা, চিলাই, চলতি, কালিউড়ি, খাসিয়ামারা, ধূমখালি, মৌলা ও ছাগলচোরাসহ বিভিন্ন নদীনালা, খালবিল ও হাওরের পানি এখনো বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সাথে উত্তাল ঢেউয়ে নদীতীরের দোকানপাট, স্থাপনা ও হাওরপাড়ের রাস্তাঘাটসহ অনেক কাঁচা বাড়িঘর ক্রমশ ধ্বসে যাচ্ছে। সর্বত্র বানের পানি থৈ থৈ করায় গৃহস্থালি মালামাল রক্ষায় ব্যস্ত থাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিতে পারেনি অনেক পরিবার। ফলে গবাদি পশু ও পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে, অনাহারে অসহনীয় হয়ে উঠেছে বানভাসিদের জনজীবন। অপরদিকে বন্যায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের কাঁচা-পাকা রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্ট, কাঁচা ঘরবাড়ি, হাজার হাজার হেক্টর উঠতি আউশ, বোরো ও রবিশস্য। বন্যায় ভেসে গেছে উপজেলার অর্ধশতাধিক পুকুরের কোটি টাকার মাছ।
এদিকে চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল ত্রাণ, পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব, খাদ্যাভাবে চরম সংকটাপন্ন গবাদি পশু ও পরিবার পরিজন নিয়ে হাওরপাড়ের বানভাসিদের আহাজারি চলছে। তবে প্রধান অন্তরায় হচ্ছে চলাচলের অযোগ্য গ্রামীণ জনপদের বিধস্ত রাস্তাগুলো। গত ৭দিন ধরে জেলা ও উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে উপজেলার ৯ ইউনিয়নের।
বন্যা উপদ্রুত দোয়ারাবাজার উপজেলাকে অচিরেই দূর্গত এলাকা ঘোষণা করে পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার দাবি জানিয়েছেন উপজেলাবাসী।
ইউএনও দেবাংশু কুমার সিংহ জানান, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় নিপীড়িত জনগণের পাশে রয়েছে বর্তমান খাদ্যবান্ধব সরকার। দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মওজুদ রয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দুর্গত এলাকায় পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট ও পানীয় জল, জরুরি ওষুধপত্র, শুকনো খাবার ও চাল-ডাল বরাদ্দসহ জরুরী ত্রাণ তৎপরতায় সচেষ্ট রয়েছে।
সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে সংবাদদাতা জানান, বন্যার পানি কিছুটা কমলেও ছাতকের সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলার পানিবন্দী লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। ছাতক শহরে কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও নিম্নাঞ্চলের মানুষ অনেকটাই আশ্রয়হীন অবস্থায় রয়েছে। অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করায় শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।সুনামগঞ্জের শাল্লা থেকে সংবাদদাতা জানান, উজান থেকে নেমে আসা পানিতে একদিনে শাল্লা উপজেলার হাওর অঞ্চলে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার বিকেল থেকে হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই সংগ্রহ করতে পারেননি গো-খাদ্যসহ জ্বালানির খড়। এ ব্যাপারে শাল্লার ইউএনও মোঃ আবু তালেবের সাথে মুুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন. উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে শাল্লায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড-এর (দিরাই শাখা ২) শাল্লা উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল কাইয়ুম বলেন, উজান থেকে প্রবাহিত পাহাড়ি ঢলের পানিতে শাল্লার নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রত্যেকটি হাওরে পানি প্রবেশ করেছে। শাল্লা ইউনিয়নের ইয়ারাবাদ গ্রামের বাসিন্দা নাঈম হোসেন বলেন, হঠাৎ করে পানি আসায় আমরা গো-খাদ্য তুলতে পারিনি।

You might also like