সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ধোপাজান চলতি নদীতে মহামান্য হাইকোর্টের রায়ে বালি পাথর উত্তোলন ইজারা বন্দোবস্ত বন্ধ থাকায় স্থানীয় বালি ও পাথর খেকো চক্রের সদস্যরা রাতের আধারে নদীর পাড় কেটে বালি ও পাথর উত্তোলন করে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো যেম হমুকির মুখে তেমিন প্রতিবেশের ও ক্ষতি হচ্ছে মারাত্মকভাবে। এ নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে বার বার সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারিত হলে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো: জাহাঙ্গীর হোসেনের নির্দেশে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান শাহরিয়ার ও সদর উপজেলা ভুমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভুমি) সাদিয়া সুলতানার নেতৃত্বে বার বার অভিযান পরিচালনা করা হলে স্থানীয় বালি খেকোচক্রের সদস্যরা আক্রোশান্বিত হইয়া উঠে। তারই ধারবাহিকতায় শনিবার দুপুরে খাইয়ারগাও এলাকায় অবৈধ বালি পাথর উত্তোলনকারী নৌকা, বলগেট ও বোমা মেশিন জব্ধ করতে গেলে স্থানীয় খাইয়ারগাও গ্রামের বাসিন্দা ও বালি খেকো চক্রের সদস্যরা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সাদিয়া সুলতানা, উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার আনোয়ার হোসেন,ইউনিয়ন ভুমি অফিসের ভুমি সহকারী কর্মকর্তা নুুর আলীর উপর হামলা চালায় এবং ইটপাথর নিক্ষেপ করে গুরুতর জখম করে। জখম প্রাপ্তরা সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় প্রাণে রক্ষা পায় এবং তারা সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করেন।
বালি পাথর খেকো চক্রের সদস্যদের মধ্যে খাইয়ারগাও গ্রামের সৈয়দ আলীর পুত্র মকবুল হোসেন, ইব্রাহিম আলীর পুত্র আমির আলী, জাহাঙ্গীর নগর ইউপি সদস্য ও চক্রের হোতা নজরুল ইসলাম মানিক,ইকবাল হোসেন, জয়নাল বাগার পুত্র হালিম, মুজিবুরের পুত্র অলি ইসলাম, আব্দুর বারিকের পুত্র মাইনুদ্দিন, খালিকের পুত্র বাদশা মিয়া, সফিকুলের পুত্র সজল, বজলুর পুত্র আনোয়ার ও রবিউল্লাহর পুত্র হারুনকে আসামী করে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় ১৪৩/৩৪২/৩৩২/ ৩৫৩/১৮৬/১১৪/৩৪ ধারা মোতাবেক সরকারী কাজে বাধাসহ অবৈধ অবরোধ করে মারপিট করে জখমের অভিযোগ করা হয়। মামলাটি তদন্ত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সদর থানার এসআই শরিফ উদ্দিনকে। সুত্র জানায়, ধোপাজান চলতি নদীটি ইজারা বন্দোবস্ত বন্ধ থাকায় খাইয়ারগাওসহ আশপাশের কিছু বালি খেকোচক্রের সদস্যরা রাতের আধারে নদীর পাড় কেটে ফসল জমি, নিরীহ মানুষের বসতবাড়ী ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কেহ কথা বলার সাহস পায় না। বালি খেকো চক্রের সদস্যরা অবৈধভাবে বালি পাথর বিক্রি করে লাখ লাখ টাকার মালিক বনে যাওয়ায় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরকেও তারা তোয়াক্কা করছেন না। তাদের উপরও চালানো হয়েছে হামলা।এ ব্যাপারে সদর উপজেলা ভুমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভুমি) সাদিয়া সুলতানা জানান, আমাদের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে অবৈধ বালি পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার উদ্দেশে গেলে কিছু লোক অবৈধ বালি উত্তোলনকারীদের পক্ষাবলম্বন করে আমাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে করে আমার ৫জন কর্মকর্তা কর্মচারী আহত হয় এবং আমরা পুলিশের সহযোগিতায় প্রাণে রক্ষা পাই এবং আমরা হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করে ১২জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০জনকে আসামী করে মামলা রুজু করা হয়েছে। আমাদের উপর হামলা করে উল্টো মিথ্যাচার করছেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান শাহরিয়ার জানান, আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে অবৈধ বালি পাথর উত্তোলনকারীদের সক্রিয় সদস্যরা। কোন সাধারন মানুষের সম্পৃক্ততা নেই। মানিক মেম্বারের ভাই বালি খেকোচক্রের সদস্য মকবুল হোসেনের অবৈধবালি ভর্তি নৌকাকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিলাম। আর সে জন্যই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। অবৈধভাবে বালি পাথর উত্তোলন করতে দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।