সোনিয়া হত্যা সজিব ফের রিমান্ডে
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ সিলেটি নাটকের অভিনেত্রী ও টিকটকার তরুণী সোনিয়া আক্তার (২১) হত্যাকা-ের পর এক সপ্তাহ চলে গেলেও প্রকৃত রহস্য এখনও উদঘাটন হয়নি। জানা যায়নি কী কারণে সোনিয়াকে হত্যা করা হয়েছে।এছাড়াও সোনিয়ার মামাতো ভাই মূল অভিযুক্ত মো. সজিবকে (২৯) প্রথম দফায় ৩ দিনের
রিমান্ডে নিলেও পুলিশের কাছে তিনি মুখ খুলেন নি। ফলে তাকে আরও ২ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। ২০ ফেব্রুয়ারি সোমবার দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষ হবে।বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নগরির শেখঘাট খুলিয়াটুলা আবাসিক এলাকার নীলিমা-১৪ নম্বর বাসা থেকে সোনিয়ার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার শীতলজুড়া গ্রামের বিল্লাল আহমদের মেয়ে ও দক্ষিণ সুরমার লাউয়াইস্থ নুরজাহান মেমোরিয়াল মহিলা ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী। তিনি মা ও সৎ বাবার সঙ্গে ওই বাসার ৪র্থ তলায় থাকতেন। সোনিয়া সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার নাটকে অভিনয় এবং মোবাইলভিত্তিক অ্যাপস টিকটক ও লাইকিতে ভিডিও করতেন।পারিবারিক ও পুলিশ সূত্র জানায়, হত্যাকা-ের আগে সোনিয়াদের বাসায় রাত্রিযাপন করেন তার মামাতো ভাই সজিব। সজিব হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শরীফনগর গ্রামের মো. নুরুদ্দিনের ছেলে। ওইদিন সকালে সোনিয়ার সৎ বাবা সেলিম মিয়ার অসুস্থতার কারণে তাকে নিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যরা হাসপাতালে চলে যান। পরে দুপুর ১২টার বাসায় ফিরে সোনিয়ার শয়নকক্ষে গিয়ে তার গলাকাটা লাশ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা।
প্রথম থেকেই সোনিয়ার পরিবারের দাবি ছিলো, এই হত্যাকা-ের সঙ্গে সজিব জড়িত। পুলিশের সন্দেহেও ছিলো সজিবের দিকে। ঘটনার পর থেকে সজিব গা ঢাকা দেয়ায় সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়। সোনিয়ার ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণলঙ্কারও খোয়া গেছে বলে দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা।এদিকে, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকা-ের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি র্যাবও তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে র্যাব ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ৯টার দিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
এদিকে, গ্রেফতারকৃত সজিবকে ১৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেন ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র গণমাধ্যমকে জানায়, রিমান্ডের প্রথম দিন সজিবকে নিয়ে সোনিয়াদের বাড়িতে যায় এবং তার দেখিয়ে দেয়া স্থান থেকে বালতিতে রাখা রক্তমাখা জামা উদ্ধার করে। জামায় দুজনেরই রক্ত আছে কি না তা পরীক্ষার জন্য পুলিশ জামাটি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠিয়েছে।
সূত্রটি গণমাধ্যমকে আরও জানায়, প্রথম দফা রিমান্ডে নেয়ার পর পুলিশের কাছে সজিব স্বীকারোক্তি দিলেও ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার তাকে আদালতে তুললে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী না দেয়ায় পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আরও ২ দিনের রিমান্ডে দেন আদালত।১৯ ফেব্রুয়ারি রোববার দ্বিতীয় দফা রিমান্ডের প্রথম দিন। ২ দিনের রিমান্ড শেষে সোমবার সজিবকে ফের আদালতে তোলা হবে।