হাওরে হাউজবোটে বিদ্যুৎ চুরি

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ হাওর-বাওড় অধ্যুষিত জেলা সুনামগঞ্জ। বর্ষা মৌসুমে একসময় জেলার তাহিরপুর উপজেলা থেকে ছোট নৌকায় করে পর্যটকরা টাঙ্গুয়ার হাওর, নীলাদ্রি, শহীদ সিরাজ লেকসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরতে যেত।কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে সেসব ছোট নৌকা। হাওরের পর্যটন এলাকাগুলো এখন দখল করে নিয়েছে বড় বড় হাউজবোট।হাওরের চারদিকে দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব বোট। যার ফলে দিন দিন নষ্ট হচ্ছে হাওরের সৌন্দর্য, বিনিষ্ট হচ্ছে রূপবৈচিত্র।এছাড়া হাউজবোটগুলো বিদ্যুৎ বিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে চুরি করে বিভিন্ন দোকান থেকে অবৈধভাবে টানছে বিদ্যুৎ লাইন।সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সাহেববাড়ি ঘাট এলাকার সুরমা নদীর পাড়ে প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি বিভিন্ন ধরণের হাউজবোট রয়েছে। এই হাউজবোটগুলো পর্যটকদের কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত দু’দিনের জন্য প্যাকেজে ভাড়া দিয়ে থাকে। বিনিময়ে হাওরের সৌন্দর্য ঘুরে দেখায় তারা। কিন্তু এই হাউজবোটের ভেতরে থাকা ফ্যান, লাইট, চার্জার লাইট, আইপিএসসহ বিভিন্ন ধরণের যন্ত্রপাতি চার্জ দেয়া হয় নদীর পাশে সড়কের ওপরে গড়ে ওঠা দোকানপাট থেকে বিদ্যুতের লাইন টেনে। দিনে দুপুরে অবৈধভাবে লাইন টেনে নৌকাগুলোতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হলেও নীরব ভূমিকা পালন করছে সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগ। শুধু সাহেববাড়ি ঘাট নয়, শহরের লঞ্চঘাট, বৈঠাখালী ঘাট, ওয়েজখালীসহ প্রায় শতাধিকের ওপরে হাউজবোটগুলোতে এভাবেই অবৈধ লাইন টেনে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া হয়েছে।সরেজমিনে দেখা গেছে, হাউজবোটগুলো লম্বা তারে সড়কের ওপাশের দোকান থেকে লাইন টেনে মাটির নিচে বোর্ড বসিয়ে সেখান থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ব্যবহার করা হচ্ছে চোরাই এই বিদ্যুৎ।

সাহেববাড়ি ঘাট এলাকার বাসিন্দা খোরশেদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে যখন বিদ্যুৎসংকট চলছে, তখন এসব হাউজবোট অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। এটা সত্যিই দুঃখজনক। বিদ্যুৎ বিভাগের এদিকে নজর দেয়া উচিৎ।ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন কেউ যাতে অহেতুক বিদ্যুৎ অপচয় না করে। অথচ এই হাউজবোটগুলো ইচ্ছামতো অবৈধভাবে লাইন টেনে বিদ্যুৎ অপচয় করছে। এদেরকে আইনের আওতায় আনা জরুরি। সাহেববাড়ি নদীর ঘাটে থাকা হাউজবোটের ম্যানেজার কিংবা কর্মচারীদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তারা কোনো উত্তর না দিয়ে সেখান থেকে তড়িগড়ি চলে যান।তবে সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, লাইন টেনে কেউ নদীতে থাকা হাউজবোটে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারবে না। যারা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। এটা এক প্রকার বিদ্যুৎ চুরি করে ব্যবহার করা হচ্ছে। এদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

You might also like