১৩ বছর আইনি লড়াইঃ অবশেষে কারাগারে বিয়ে
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ দীর্ঘ ১৩ বছর আইনি লড়াই করে অবশেষে প্রেমিকের সঙ্গে কারাগারে বিয়ে হলো সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুরের মোছা. দুলভী বেগমের। হাইকোর্টের নির্দেশে ২৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ কারাগারের জেল সুপারের কক্ষে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা হোসেনসহ কারা কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন।
জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা জানান, কনে দুলভী বেগম তার পিতা মারা যাবার পর মা সরলা বেগমসহ মামা বাবুল মিয়ার বাড়ি জগন্নাথপুরের শ্রীরামসী এলাকার নবীনগরে চলে আসেন। ওখানেই গ্রামের ছাইম উল্লাহর ছেলে আব্দুর রশিদ শহিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। পরে গোপনে কাবিন ছাড়া বিয়েও করেন তারা। এ অবস্থায় দুলভী গর্ভবতী হলে দুই মাসের মাথায় শহিদ মিয়া লন্ডন চলে যান। এরপর থেকে দুলভী বেগমের সঙ্গে স্বামী শহিদ মিয়া যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। দুলভী বেগম জানান, সন্তান জন্ম দেয়ার পর দুলভীকে স্ত্রীর অধিকার দিতে অস্বীকার করেন স্বামী আব্দুর রশিদ শহিদ। কয়েক বছর পর দেশে ফিরে অন্যত্র বিয়েও করেন তিনি। স্ত্রীর অধিকার দিতে ২০১১ সালে জগন্নাথপুর থানায় মামলা করেন দুলভী। এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় আব্দুর রশিদ শহিদের।
মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আদেশে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে দুলভী ও আব্দুর রশিদ শহিদের বিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হয়। ৬ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে পড়ান কাজী। আব্দুর রশিদ শহিদের দ্বিতীয় স্ত্রী সাজনা বেগমও বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা হোসেন, জেল সুপার শফিউল আলম, অতিরিক্ত জেল সুপার হুমায়ুন কবিরসহ দু’পক্ষের আত্মীয়-স্বজনও বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত ছিলেন।
দুলভী বেগম বলেন, ১৩ বছর পর সন্তানকে বাবার পরিচয় দিতে পেরে আমি খুশি।
অতিরিক্ত জেল সুপার হুমায়ুন কবির বললেন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আদেশে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।