ছয় দাবিতে ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুতদের মহাসড়ক অবরোধ

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের চাকরিচ্যুত ও ওএসডি থাকা কর্মীরা। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ এলাকায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই অবরোধ করা হয়। এতে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটের উভয় পাশে ১০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কের সিটি গেইট থেকে মাদামবিবির হাট পর্যন্ত যানজট রয়েছে।

আজ শনিবার সকাল ১১ থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। শুরুতে সড়কের পাশে ব্যানার নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি করলেও পর তারা মহাসড়ক অবরোধ করেন। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। পরবর্তীতে পুলিশ গিয়ে সড়ক থেকে সরে যেতে অনুরোধ করলে দুপুর ১ টায় মহাসড়ক থেকে নেমে সরে আসে ব্যাংককর্মীরা। কর্মসূচিতে হাজারও ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেন।ব্যাংককর্মীদের এই কর্মসূচিতে দেশের ব্যস্ততম মহাসড়কটিতে প্রায় দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সড়কের সৃষ্টি হয় উভয় পাশে ১০ কিলোমিটার তীব্র যানজট, ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের।অবরোধকারীরা অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৪০০ কর্মকর্তাকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ৪-৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। এতে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন, পরিবার নিয়ে পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়। এই সংকট নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আজকের এই কর্মসূচি।

ব্যাংকটির চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা এমদাদ হোসাইন বলেন, সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী কতটুকু অসহায় সেই কথা বলতে আমরা মাঠে নেমেছি। আমরা আজকের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টাসহ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনারা আমাদের এই সংকট সমাধান করতে এগিয়ে আসুন।মানবন্ধনে অংশ নেওয়া চাকরিচ্যুত আরেক ব্যাংক কর্মকর্তা নুর উদ্দিন বলেন, ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে আমাদের স্যালারি অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে। আমাদের অ্যাকাউন্টে থাকা বেতনের টাকাও আমরা তুলতে পারছি না। বাসার বাজার খরচের টাকাও আমাদের হাতে নেই।এর আগে গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা আগামী রোববার থেকে টানা কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। আজ শনিবার সকাল থেকেই মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের আন্দোলন শুরু হয়। আগামীকাল রোববার থেকে তাদের কর্মবিরতি চলবে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর বিপুলসংখ্যক কর্মী সরাসরি সিভি দিয়ে চাকরিতে যোগ দেন। তাদের বেশিরভাগই ছিলেন চট্টগ্রামের পটিয়া ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার বাসিন্দা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রদবদল আসে ওই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে। ২০১৭ সালের পরে ব্যাংকে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিশেষ দক্ষতা মূল্যায়ন পরীক্ষা আয়োজন করে। ৫ হাজার ৩৮৫ জন কর্মকর্তার অংশগ্রহণের কথা থাকলেও মাত্র ৪১৪ জন পরীক্ষা দেন। যারা আসেননি, সেই ৪ হাজার ৯৭১ জনকে পরদিন থেকেই ওএসডি করা হয়। আর পরীক্ষার বিরোধিতা ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে দুই দফায় চাকরিচ্যুত হন ৪০০ কর্মী।

You might also like