ছাতক-দোয়ারা’র চেলা-মরা চেলা নদী বালু মহাল পুনঃ ইজারা প্রদানে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ

শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী

সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারা উপজেলার চেলা ও মরা চেলা নদী বালু মহাল পুনঃ ইজারা প্রদান স্থগিত করেছেন হাইকোট। ১৯ মে হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভার্চুয়াল কোর্টে বালু মহাল পুনঃ দরপত্র আহবানে স্থগিতাদেশ প্রদান করা হয়।জানা যায়, গত ১৫ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১ বৈশাখ-৩০ চৈত্র ১৪২৭ বাংলা অর্থ বছরের জন্য ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলাধীন চেলা ও মরা চেলা নদী বালু মহাল ইজারা প্রদানে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক কর্তৃক ১ এপ্রিল ১ম, ১৩ এপ্রিল ২য় এবং ২৭ এপ্রিল ৩য় পর্যায়ে দরপত্র আহবান করা হয়। এতে দরদাতাগন ১ম ও ২য় পর্যায়ে তারিখ অনুযায়ী কোন ইজারা গ্রহীতা ইজারা গ্রহনে আগ্রহ না দেখালে ৩য় (চুড়ান্ত) পর্যায়ে ২৭ এপ্রিল যথা সময়ে মেসার্স কাওসার ট্রেডার্স নামে দরপত্র দাখিল করা হয়। ২৮ এপ্রিল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে রাজস্ব শাখায় দরপত্র খোলা হলে মোঃ কাওসার আহমদ মালিকানাধিন মেসার্স কাওসার ট্রেডার্স সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হয়।

এদিকে ১২ মে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা বালু মহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় চেলা ও মরা চেলা নদী বালু মহাল পুনঃ দরপত্র আহবানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বালু মহাল ইজারায় সরকারী চাহিদা অনুযায়ী দরপত্রে উল্লেখিত অর্থ কম দেখিয়ে পুনঃ দরপত্র আহবানের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে মতামত চেয়ে চিঠি প্রেরন করা হয়। এদিকে পুনঃ দরপত্র আহবানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে বিবিধ আপিল দায়ের করা হয়।অপরদিকে ১৪ মে জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত চেলা ও মরা চেলা নদী বালু মহাল পুনঃ ইজারার লক্ষ্যে দরপত্র আহবান করে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়। পুনঃ দরপত্র আহবানের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে মেসার্স কাওসার ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী মোঃ কাওসার আহমদ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোট বিভাগের ভার্চুয়াল কোর্টে একটি রীট আবেদন দাখিল করেন। রীটের প্রেক্ষিতে ভার্চুয়াল কোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান গত ১৪ মে চেলা ও মরা চেলা নদী বালু মহাল (স্মারক নং-০৫.৪৬.৯০০০.০০৮.১২.০১১.১৬-৪৫২) পুনঃ দরপত্র কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।

মেসার্স কাওসার ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী মোঃ কাওসার আহমদের দাবী, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ৩য় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে তিনি ইজারা প্রাপ্তির একমাত্র দাবীদার। আইন অনুযায়ী পরপর দু’টি ইজারা বার ডাকে সরকার নির্ধারিত ইজারা মুল্য না পাওয়া গেলে ৩য় ডাকে সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা ব্যবস্থাপনা কমিটির বিবেচনায় ইজারা প্রদান করার বিধান রয়েছে। এদিকে বিভিন্ন জটিলতার অজুহাতে ইজারা প্রদানে আরো বিলম্ব হলে সরকারী রাজস্ব ও লিজ গ্রহীতার বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই ইজারার জন্য নির্ধারিত অর্থ বছরের ২ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। এ সুযোগে স্থানীয় একটি চক্র চেলা ও মরা চেলা নদীতে বালু-পাথর উত্তোলনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। চক্রটি সন্ধ্যা থেকে রাতভর ভাসমান মেশিন বসিয়েও নদী থেকে বালু-পাথর উত্তোলন ও নৌকা ভর্তি করে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি সরকারী রাজস্বের স্বার্থে দ্রুত বিবেচনা ও ববস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন মেসার্স কাওসার ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী মোঃ কাওসার আহমদ।

You might also like