আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস আজ

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ কন্যা-জায়া-জননী। আজ যে শিশুকন্যা, কাল সে জননী, মা। সকল কন্যাশিশুর জন্য নিরাপদ পৃথিবী গড়তে ২০১২ সাল থেকে প্রতিবছরের মতো সোমবার (১১ অক্টোবর) বিশ্বজুড়ে ‘আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস’ পালনের উদ্যোগ নেয় জাতিসংঘ।

তথ্যপ্রযুক্তিতে কন্যাশিশুদের দক্ষতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে এই দিবসটির এবারের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘ডিজিটাল জেনারেশন, আওয়ার জেনারেশন’ অর্থাৎ ডিজিটাল প্রজন্মই, আমাদের প্রজন্ম। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হবে দিবসটি।নারীদের শিক্ষার অধিকার, আইনি সহায়তা ও ন্যায় অধিকার, চিকিৎসা সুবিধা, বৈষম্য থেকে সুরক্ষা, নারীর বিরুদ্ধে হিংসা ও বাল্যবিয়ে বন্ধে কার্যকর ভূমিকা পালনের উদ্দেশ্যে ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর প্রথম এ দিবস পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।বর্তমান বিশ্বে কন্যাশিশুর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ। আর বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ কন্যাশিশু রয়েছে। প্রান্তিক সমাজ কাঠামোয় তারা অধিকাংশই অবহেলিত। একই সঙ্গে কন্যাশিশুরা মৌলিক অধিকার, নিরাপত্তা ও পুষ্টিহীনতারও শিকার।জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এছাড়া এদেশে ১৮ শতাংশ মেয়ের ১৫ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে হচ্ছে ও ১৮ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে হয় ৫২ শতাংশ কন্যাশিশুর। করোনা মহামারির এই সময়ে দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাল্যবিয়ের সংকট বর্তমানে আরও বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে দেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সভা, সেমিনার, শোভাযাত্রাসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ‘কিশোরী-কিশোরদের আত্মোন্নয়নে ইতিবাচক পরিবেশের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে অংশ নেবেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি এমপি এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম। আরও উপস্থিত থাকবেন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রামচন্দ্র দাস, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ওরলা মার্ফি ও ইউনিলিভার বাংলাদেশের সিইও জাভেদ আখতার প্রমুখ।

ইউনিলিভার বাংলাদেশ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও চাইল্ড অ্যাফেয়ার্স জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক যৌথভাবে এটি আয়োজন করেছে।আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের ‘কারণ আমি একজন মেয়ে’ নামক আন্দোলনের ফসল। এ আন্দোলনের মূল কর্মসূচি হলো ‘বিশ্বজুড়ে কন্যাশিশুর পরিপুষ্টি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা’। এ সংস্থার কানাডার কর্মচারীরা এ আন্দোলনকে বিশ্বদরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে কানাডা সরকারের সহায়তা নেয়। কানাডাই প্রথম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালনের প্রস্তাব দেয়।পরে ২০১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর তারিখে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় এ প্রস্তাব গৃহীত হয়। এরপর ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর প্রথম আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশ সরকার এই দিবসটি পালনের পাশাপাশি একই লক্ষ্য নিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় কন্যাশিশু দিবস পালন করে থাকে।

You might also like